আরামবাগ থানার সামনে থেকে খোলা হচ্ছে সরকারি ফ্লেক্স। ছবি: মোহন দাস
নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা হয়েছে রবিবার বিকেলে। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সোমবার সকাল থেকেই হাওড়া ও হুগলির বিভিন্ন সরকারি অফিস ও জায়গা থেকে রাজনৈতিক দলের পোস্টার, ব্যানার এবং হোর্ডিং খুলে নেওয়ার কাজ শুরু করে দিল জেলা প্রশাসন। প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর ছবি লাগানো সরকারি প্রকল্পের প্রচারমূলক হোর্ডিং, ব্যানার এবং ফ্লেক্সও খুলে নেওয়া শুরু হয়।
এ দিন সকালে সিঙ্গুর স্টেশন সংলগ্ন ব্যস্ত রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে বিদ্যুতের খুঁটি থেকে তৃণমূল এবং বিজেপি-র ঝান্ডা এবং হোর্ডিং খুলতে শুরু করেন সরকারি ভোটকর্মীরা। এরপরে তাঁদের গন্তব্য সিঙ্গুরের গোলাপমোহিনী এবং মহামায়া হাইস্কুল। চলছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্রছাত্রীদের এখন হোর্ডিং মারফত শুভেচ্ছা জানানোটা রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক দলের। খোলা হল সেই হোর্ডিংও। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের অনেক দেওয়াল-লিখন স্কুলের সীমানা প্রাচীরে এখনও জ্বলজ্বল করছে। মোছা হল তা-ও। সিঙ্গুর স্টেশনে টাঙানো সমস্ত হোর্ডিং-ও খোলা হয়। বলাগড় ব্লক অফিস থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সংবলিত ফ্লেক্স খুলে ফেলা হয়।
রাজনৈতিক দলগুলি যেমন সোমবার থেকেই প্রচারে নেমেছে, একই ভাবে নির্বাচনী বিধি কার্যকর করতে ময়দানে নেমেছেন সরকারি কর্মীরাও। হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই কাজ শেষ করা হবে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘সরকারি দফতর থেকে রাজনৈতিক দলের ফ্লেক্স, ব্যানার, পতাকা খোলার কাজ চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই তা শেষ করা হবে।’’
এ দিন হাওড়ায় উলুবেড়িয়া ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে উলুবেড়িয়া পূর্ব এবং উলুবেড়িয়া দক্ষিণ— এই দুই বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন দলের ব্যানারও খোলার কাজ হয়। জোড়া কলতলা থেকে জেলাপাড়া সেতু পর্যন্ত মুম্বই রোডের ধারের সব ব্যানারও খুলে দেওয়া হয়। এরপরে উলুবেড়িয়া-১ ব্লক অফিস এবং উলুবেড়িয়া মহকুমাশাসকের অফিস থেকেও ব্যানার খোলা হয়।
জেলাশাসকের কার্যালয়ই এখন জেলা রিটার্নিং অফিসারের দফতর। ওই দফতর থেকে জানানো হয়েছে, পোস্টার-ব্যানার খোলার কাজে আজ, মঙ্গলবার লোকজন আরও বাড়ানো হবে। প্রথম পর্যায়ে সব সরকারি অফিস-জায়গার উপরে অবস্থিত ব্যানার-ফেস্টুন খোলা হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ব্যক্তিগত জায়গাগুলির উপরে নজরদারি চালানো হবে। সে ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে যদি কোনও প্রচারমূলক পোস্টার-ব্যানার থাকে তা হলে দেখা হবে সম্পত্তির মালিকের লিখিত অনুমোদন আছে কিনা। নির্বাচন শেষ হওয়ার পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি কেউ ভঙ্গ করছে কিনা সেই সংক্রান্ত নজরদারিও চলবে।
হাওড়ায় দু’টি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে—উলুবেড়িয়া এবং হাওড়া সদর। জগৎবল্লভপুর এবং ডোমজুড় ব্লকের কিছু অংশ পড়ে হুগলির শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে। হাওড়ায় মোট বিধানসভা কেন্দ্রের সংখ্যা ১৬। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের পোস্টার-ব্যানার খুলতে একটি করে দল করা হয়েছে। দায়িত্ব ন্যস্ত হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিডিও-দের উপরে। তবে প্রথম দিনে কাজে গতি কম ছিল।