ভোট বৈতরণী পেরোতে দুই ম্যানেজারে আস্থা কল্যাণের 

ছবিটা কিছুদিন আগের। ডোমজুড়ের ওই রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ। তাঁকে দেখে এগিয়ে যান কল্যাণ। কুশল বিনিময় করেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৯ ০১:২২
Share:

পাশে: সুবীর ও দিলীপ (সবুজ পাঞ্জাবি)। —নিজস্ব চিত্র।

ডোমজুড়ে ভোটের প্রচারে বেরিয়েছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। দলে দলে যোগ দিয়েছেন কর্মী-সমর্থকেরা। ফুল-মালা উড়ে আসছে এ দিক-ও দিক থেকে। ফুরফুরে মেজাজে প্রচার সারছেন প্রার্থী। তাল কাটল হঠাৎই।

Advertisement

ছবিটা কিছুদিন আগের। ডোমজুড়ের ওই রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে ছিলেন সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ। তাঁকে দেখে এগিয়ে যান কল্যাণ। কুশল বিনিময় করেন। সাংসদকে হাতের কাছে পেয়ে এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরেন বৃদ্ধ। বলেন, ‘‘এখানকার নর্দমা পরিষ্কার হয় না। আমরা বলে বলে হাল ছেড়ে দিয়েছি। আপনি যদি কিছু করতে পারেন, খুব ভাল হয়।’’

এতক্ষণ ফুরফুরে থাকা প্রার্থীর চোখ-মুখ দৃশ্যতই পাল্টে গেল। চড়া সুরে হাঁক মারলেন স্থানীয় নেতাদের। ‘দাদা’র চিৎকার শুনে কাছাকাছি চলে এলেন হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় এবং উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব। ক্ষোভ উগরে দিয়ে কল্যাণ বলেন, ‘‘কী রে? কিছুই খেয়াল রাখিস না। আমাকে প্রচারে এই সব অভিযোগ শুনতে হচ্ছে?’’ লজ্জায় মুখ লাল সুবীরের। কিছুটা দূরে থমকে দাঁড়িয়ে দিলীপও।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দিলীপ আর সুবীর। তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে নাওয়া-খাওয়া ভুলে ভোটের ময়দানে জান লড়িয়ে দিচ্ছেন দু’জনেই। শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রের অধীন উত্তরপাড়া, ডোমজুড় এবং জগৎবল্লভপুর বিধানসভা এলাকা দিলীপের নজরদারিতে রয়েছে। চণ্ডীতলা, জাঙ্গিপাড়া বিধানসভার দায়িত্বে সুবীর। এই জোড়া ‘ভোট ম্যানেজার’-এর কাঁধে ভর করেই কল্যাণবাবু তাঁর নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। চাঁপদানি এবং শ্রীরামপুর বিধানসভা কেন্দ্র অবশ্য কল্যাণ নিজেই দেখছেন।

ভোট-ম্যানেজারের কাজটা কী?

কথা হচ্ছিল দিলীপের সঙ্গে। এত পরিশ্রমের পরেও পান থেকে চুন খসলেই কথা শুনতে হয়, খারাপ লাগে না? দিলীপের জবাব, ‘‘ভুলটা সরাসরি স্বীকার করে নিলেই দাদার কাছে সাত খুন মাপ। ভুলের তো কোনও ব্যাখ্যা হয় না। আসলে আমরা ওঁর সঙ্গে বেরিয়ে প্রতিদিন শিখি। মানুষ যখন ঢেলে ভোট দিচ্ছেন, আমাদেরও তো কাজটা করতে হবে।’’ সুবীর বলেন, ‘‘দাদা কবে কোথায় যাবেন, এক সপ্তাহ আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখতে হয়। মোটবাইক নিয়ে গিয়ে এলাকা দেখে আসি। কোথায় গাড়ি ঢুকবে, কোথায় হেঁটে যেতে হবে, সব দেখে শুনে প্রচারের পরিকল্পনা তৈরি হয়।’’ দিলীপ বলেন, ‘‘এলাকায় দেওয়াল লেখা ঠিক হয়েছে কিনা দেখে রাখতে হয় আগে থেকে। দেওয়াল ফাঁকা দেখলে দাদার মেজাজ চড়ে যায়।’’

ওই রাতে সাংসদের সঙ্গে কথা বলেই বোঝা গেল দুই ম্যানেজারের কার্যকারিতা। তৃপ্তির হাসি হেসে কল্যাণ বলেন, ‘‘ডোমজুড়ের ওই নিকাশি নালা কিন্তু পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। জানার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নিয়েছি। আমার দুই ভোট ম্যানেজার কাজ সহজ করে দিচ্ছেন।’’

দিলীপ-সুবীরে অগাধ আস্থা কল্যাণের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন