আরামবাগে প্রাণ গেল আরও দু’জনের

মমতার কাছে উঠল ত্রাণের দাবি

বন্যা পরিস্থিতি দেখতে এ দিন বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী হাওড়া থেকে খানাকুলে আসেন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় হাওড়া সংলগ্ন খানাকুল-২ নম্বর ব্লকের মুচিঘাটা থেকে আর এগোতে পারেননি। মিনিট সাতেক ছিলেন তিনি।

Advertisement

পীষূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৮
Share:

উদ্ধার: পুরশুড়ায় তোলা নিজস্ব চিত্র।

কোথাও জেগে রয়েছে শুধু খড়ের চাল। কোথাও নারকেল গাছের অর্ধাংশ। চারিদিকে শুধু ঘোলা জলের স্রোত।

Advertisement

ডিভিসি-র ছাড়া জলে বুধবার দুপুর থেকেই মুণ্ডেশ্বরী এবং দামোদরে চরম বিপদসীমার উপর দিয়ে জল বইছিল। সন্ধে হতেই খানাকুল, পুরশুড়া এবং আরামবাগে একের পর এক বাঁধ ও সাঁকো-সেতু ভাঙতে শুরু করে। বৃহস্পতিবার সকালে দুই নদীর দু’পাড়ের বাঁধ উপচে জল ঢুকে প্লাবিত হল পরো মহকুমা। প্রাণ গেল একটি শিশু-সহ দু’জনের। ত্রাণের দাবিতে দুর্গতদের হাহাকারের মধ্যে পড়তে হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।

বন্যা পরিস্থিতি দেখতে এ দিন বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী হাওড়া থেকে খানাকুলে আসেন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় হাওড়া সংলগ্ন খানাকুল-২ নম্বর ব্লকের মুচিঘাটা থেকে আর এগোতে পারেননি। মিনিট সাতেক ছিলেন তিনি। তার মধ্যেই কয়েকশো দুর্গতের ত্রাণ নিয়ে হাহাকার শুনতে হয় তাঁকে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা অরিন্দম শী মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি করেন, যে হেতু পলাশপাই-১ ও ২ পঞ্চায়েত পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, তাই হাওড়ার আমতা-২ ব্লক থেকে এখানে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হোক।” মুখ্যমন্ত্রী তখনই মুখ্যসচিবকে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন।

Advertisement

সকালে খানাকুলের রাজহাটিতে বাড়ির কাছে জমা জলে পড়ে গিয়ে প্রদ্যুৎ কারক (৪২) নামে এক ব্যক্তি মারা যান। পুলিশ এবং স্থানীয় মানুষ দেহ উদ্ধার করেন। বিকেলে খানাকুলের শাবলসিংহপুরে বাড়ির ছাদে খেলার সময় বন্যার জলে পড়ে গিয়ে রশ্মি খাতুন নামে আড়াই বছরের একটি শিশুর মৃত্যু হয়। স্থানীয় মানুষ দেহটি উদ্ধার করেন। এই দুর্ঘটনার আগে আরামবাগের কানা নদীতে স্নান করতে নেমে তলিয়ে যায় মির মহম্মদ নামে বছর সতেরোর এক তরুণ। রাত পর্যন্ত তাঁর সন্ধান মেলেনি।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, একে তো জলের তোড়ে গোটা মহকুমাতেই বহু জায়গায় নদীবাঁধ ও সাঁকো ভেঙেছে, তার সঙ্গে খানাকুল-২ ব্লকের শাবলসিংহপুরের আজগুবিতলায় একটি ৩০০ ফুটের পাকা সেতু ভেঙে পড়ে। পুরশুড়া থানা চত্বরেও এক হাঁটু জল। ত্রাণ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে সর্বত্র। এ দিন খানাকুলের রাজহাটিতে যান সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে পুরশুড়া ব্লক অফিসে গিয়ে বৈঠক করেন। সেচমন্ত্রী বলেন, ‘‘ত্রাণ সামগ্রীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। দুর্গতদের উদ্ধার করা হচ্ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দলীয় কর্মীদের সক্রিয় হতে বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন