ডাব পাড়তে উঠে অসুস্থ, গাছে উঠে বাঁচালেন রবীন

সরস্বতী পুজোর জন্য শিস-সহ ডাব লাগবে। সেটাই পাড়তে সাত সকালে গাছে উঠেছিলেন স্থানীয় যুবক শুভদীপ দেবনাথ। কিন্তু মগডালে পৌঁছে তিনি হঠাৎই অসুস্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কোনওরকমে গাছের ডালে আটকে ঝুলতে থাকেন।

Advertisement

প্রকাশ পাল

বৈদ্যবাটি শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ২৩:০০
Share:

নামিয়ে আনা হচ্ছে শুভদীপকে। ইনসেটে রবীন।—নিজস্ব চিত্র।

সরস্বতী পুজোর জন্য শিস-সহ ডাব লাগবে। সেটাই পাড়তে সাত সকালে গাছে উঠেছিলেন স্থানীয় যুবক শুভদীপ দেবনাথ। কিন্তু মগডালে পৌঁছে তিনি হঠাৎই অসুস্থ হয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। কোনওরকমে গাছের ডালে আটকে ঝুলতে থাকেন। কী ভাবে তাঁকে নামিয়ে আনা হবে কেউই ভেবে পাচ্ছিলেন না। যে কোনও সময় পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা। বুধবার সকালে এমন ঘটনায় রীতিমতো হইচই পড়ে যায় হুগ‌লির বৈদ্যবাটির আমবাগান এলাকায়। শেষ পর্যন্ত ঘণ্টা দুয়েক পরে দমকলের লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করলেও, শুভদীপকে বাঁচানোর জন্য রবীন হাম্বিরের প্রশংসায় পঞ্চমুখ বাসিন্দারা।

Advertisement

কী করেছেন রবীন?

স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন সকাল ৬টা নাগাদ লোকজনের হইচই শুনে সেখানে হাজির হন পাশের বিধানপল্লির বাসিন্দা রবীন। গাছের উপরে বিপজ্জনকভাবে শুভদীপকে ঝুলতে দেখে কয়েকবার ডাকাডাকি করেন। কিন্তু কোনও সাড়া না পেয়ে আর দেরি করেননি। গাছে উঠে ডাব পাড়াই পেশা রবীনের। তাই সঙ্গে দড়ি ও অন্য সরঞ্জাম ছিলই। মুহূর্তে গাছে উঠতে শুরু করেন। মগডালে পৌঁছে বুঝতে পারেন শুভদীপের দেরে সার নেই। হাত-পাও শক্ত হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে নিয়ে গাছ থেকে নামা সম্ভব নয় বুঝে দড়ি দিয়ে শুভদীপকে ভালভাবে ডালের সঙ্গে বেঁধে ফেলেন। তার পরেও নিশ্চিন্ত হতে পারছিলেন না তিনি। পাছে কোনও অঘটন ঘটে, এই ভেবে গাছের উপরে তিনিও শুভদীপকে আগলে রাখেন। খবর পাঠানো হয় দমকলে। ঘণ্টাদুয়েক পরে দমকলের লোকজন এসে শুভদীপকে নীচে নামিয়ে আনেন। নেমে আসেন রবীনও। অ্যাম্বুল্যান্সে করে শুভদীপকে শ্রীরামপুরে এক হাতুড়ের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। শুভদীপের বাড়ির লোকেরা জানান, গাছে ওঠার পরে তিনি হাত-পা নাড়াতে পারছিলেন না। হাত-পা ‘লক’ হয়ে গিয়েছি‌ল। তাই এই কাণ্ড ঘটে। তবে এখন তিনি সুস্থ।

Advertisement

এলাকায় গিয়ে দেখা গেল রবীনের প্রশংসায় সকলেই পঞ্চমুখ। অনেকেরই বক্তব্য, রবীনবাবু না থাকলে শুভদীপের বড় বিপদ ঘটে যেতে পারত। বৈদ্যবাটির পুরপ্রধা‌ন অরিন্দম গুঁইন বলেন, ‘‘রবীনবাবু যা করেছেন, তার জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। ওঁকে সাধুবাদ জানাই।’’

আর কী বলছেন রবীনবাবু!

যা করেছেন তার জন্য কৃতিত্ব নিতে নারাজ রবীনবাবুর কথায়, ‘‘আর কিছুক্ষণ দেরি হলে ছেলেটি পড়ে যেতে পারত। তাই গাছে উঠে ওকে বেঁধে পাহারা দিচ্ছিলাম। আর কেউ এমন বিপদে পড়লে একই কাজ করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন