Mid Day Meal

মিড-ডে মিলে কমল আলু, আসছে ছোলা

শিক্ষক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছেন, ছাত্রপ্রতি বরাদ্দে শুধু এক কেজি আলু এবং ১০ টাকার সাবান কিনতে অনেক কম খরচ হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২০ ০৩:২১
Share:

প্রতীকী ছবি

আগামী মাস থেকে মিড-ডে মিলে কমছে আলুর বরাদ্দ। বাদ যাচ্ছে সয়াবিন এবং মুসুর ডালও। বদলে মিলবে ছোলা।

Advertisement

চলতি মাস পর্যন্ত ছাত্রপ্রতি মাসে দু’কেজি করে আলু দেওয়া হয়েছে। অগস্ট মাস থেকে দেওয়া হবে এক কেজি করে আলু এবং এক কেজি করে ছোলা। রাজ্য মিড-ডে মিল দফতর সম্প্রতি এই নির্দেশিকা জারি করে। মিড-ডে মিলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কলকাতার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের পুষ্টির কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। এক কেজি আলুর চেয়ে এক কেজি ছোলার পুষ্টি অনেক বেশি। ছোলা রেখেও খেতে পারবে পড়ুয়ারা।’’

শিক্ষক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছেন, ছাত্রপ্রতি বরাদ্দে শুধু এক কেজি আলু এবং ১০ টাকার সাবান কিনতে অনেক কম খরচ হবে। কারণ, চাল-ছোলা রেশনে মিলবে। এতদিন ডাল ও সয়াবিন কিনতে হচ্ছিল। আগামী মাস থেকে হবে না। ফলে, সেই টাকা উদ্বৃত্ত হবে। শিক্ষকদের অভিযোগ, নতুন সিদ্ধান্তে ছাত্রপ্রতি বরাদ্দ অর্থে কোপ মারা হচ্ছে। উঠছে পুষ্টির প্রশ্নও।

Advertisement

আমতার একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক তথা ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই বলেন, ‘‘রেশনের বদলে ছোলা যদি বাইরে থেকেও কেনা হত, তা হলেও ছাত্রপ্রতি বরাদ্দের টাকায় দু’কেজি করে আলু দেওয়া যেত। তাতে পুষ্টির ঘাটতি অনেকটা মিটত।’’ আলুর বরাদ্দ বাড়ানো এবং সয়াবিন ও মুসুর ডালের দাবিতে তাঁরা শিক্ষা দফতরে চিঠিও দিয়েছেন বলে পিন্টুবাবু জানান।

ওই আধিকারিকের দাবি, ‘‘প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিকে মিড-ডে মিলের বাজেট অনুযায়ীই সবটা হিসাব করে দেওয়া হয়েছে। আমরা ৫০০ গ্রাম ছোলা দিয়ে তার সঙ্গে দু’কেজি আলু দিতে পারতাম। কিন্তু ৫০০ গ্রাম ছোলা না-দিয়ে পুষ্টির কথা বিবেচনা করেই এক কেজি ছোলা দেওয়া হল। আলুও এক কেজি দেওয়া হল।"

গত ১৫ জুলাই সরকারি নির্দেশিকায় বলা হয়, ছাত্রপ্রতি মাসে চাল বরাদ্দ দু’কেজি, আলু দু’কেজি, মুসুর ডাল ২৫০ গ্রাম, সয়াবিন ১০০ গ্রাম এবং একটি সাবান। গত ২১ জুলাই পরিবর্তিত নির্দেশিকায় জানানো হয়, চাল দেওয়া হবে দু’কেজি করেই। এ ছাড়া, আলু এক কেজি, ছোলা এক কেজি এবং সাবান একটি।

মিড-ডে মিল চালানোর জন্য সরকার প্রতিটি স্কুলকে নিখরচায় চাল দেয়। আনাজ এবং জ্বালানির দাম বাবদ নগদ টাকা বরাদ্দ করে। প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রপ্রতি বরাদ্দ মাসে ১২০ টাকা। ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাসে ১৪৭ টাকা। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আলু এবং সাবান বাইরে থেকে স্কুলগুলিকে কিনতে হবে।

অনেক শিক্ষক জানিয়েছেন, গ্রামের স্কুলগুলির পড়ুয়াদের বেশিরভাগই শ্রমিক পরিবারের। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাড়িতে তাঁদের পুষ্টিকর খাবার জুটছে না। এখন আলুর বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ায় শ্রমিক পরিবারের ছাত্রছাত্রীরা বেশি করে পুষ্টির সমস্যায় পড়বে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন