প্রতিবন্ধী শিবিরে শনাক্তকরণ, শংসাপত্র দেওয়া বা নবীকরণে হয়রানির অভিযোগ উঠল আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে। অভিযোগ উঠেছে শিবিরের পরিকাঠামো নিয়েও।
অভিযোগ, গত ২৪ জানুয়ারি শংসাপত্র নবীকরণ করাতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন দুঃস্থ পরিবারের প্রতিবন্ধী প্রীতম সোমের বাবা পঙ্কজ সোম। বিষয়টি হাসপাতাল কতৃর্পক্ষের নজরে আনার পরেই তা নিয়ে হইচই শুরু হয়।
স্থানীয় নির্ভয়পুর গ্রামের বছর একুশের প্রীতম পেশী ও অস্থি সংক্রান্ত প্রতিবন্দ্বী। তাঁর বাবার অভিযোগ, “ছেলের শংসাপত্রের নবীকরণের জন্য তাকে নিয়ে ৩০০ টাকা গাড়ি ভাড়া করে হাসপাতালে আসি। ছেলেকে কোলে করে দোতলায় শিবিরে নিয়ে যাই। কিন্তু সেখানে বলা হয় ফের নীচে গিয়ে বহির্বিভাগে টিকিট কেটে চিকিৎসককে দেখিয়ে আনতে হবে। বহির্বিভাগে লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কেটে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি অস্থি বিভাগে যেতে বলেন। ওই দিন মঙ্গলবার হওয়ায় অস্থির বহির্বিভাগ বন্ধ ছিল। ফলে ছেলেকে নিয়ে ফিরে আসতে হয়।’’
হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রতি মঙ্গলবার প্রতিবন্ধী শিবির হয় মহকুমা হাসপাতালের দোতলায়। সকাল ১০টায় প্রতিবন্ধ শনাক্তকরণ শিবির খোলা হয়। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী কান নাক গলা, চক্ষু ও মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে হাসপাতালে বহির্বিভাগে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে দেখিয়ে শিবিরে আনতে হবে। অভিযোগ, অস্থি সংক্রান্ত প্রতিবন্ধীদের সেই বাধ্যবাধকতা না থাকা সত্ত্বেও তাঁদেরও বহির্বিভাগের টিকিট কাটতে গিয়ে হয়রান হতে হয়। এ ছাড়া বহু প্রতিবন্ধী এবং তাঁদের পরিবারেরর প্রশ্ন, শিবির পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রের ৬ জনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকলেও কেন তাঁদের টিকিট কেটে বহির্বিভাগে চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়? শিবিরের দিনগুলিতে গড়ে ৫০ থেকে ৭০ জন প্রতিবন্ধী আসেন। প্রতিবন্ধী পিছু অন্তত দুজন পরিবারের লোক থাকেন। অথচ প্রতিবন্ধীদের জন্য মাত্র ১৫টি চেয়ার এবং দুটি বেঞ্চ রাখা হয়েছে। ফলে মেঝেতে বসেই অপেক্ষা করতে হয় প্রতিবন্ধীদের। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার সুব্রত ঘোষ বলেন, “এমনিতেই প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে নির্দেশিকার বাইরেও বিবেচনা করা হয়। তারপরেও হয়রানি নিয়ে অভিযোগ ওঠায় তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, “শিবির যাতে নীচে আয়োজন করা যায় তার চেষ্টা চলছে।’’