মাকে কুপিয়ে খুন, ছেলের যাবজ্জীবন

এ দিন সাজা ঘোষণার আগে বিচারক জয়ন্তর বক্তব্য জানতে চান। জয়ন্ত বলে, ঘটনার দিন তার মাথা যন্ত্রণা করছিল। সে মাকে ওই কথা জানায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:১১
Share:

দায়ী: আদালতে রায়ের পর জয়ন্ত দাস। নিজস্ব চিত্র

সম্পত্তির জন্য মাকে খুনের দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল। বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুর আদালতের দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক ইন্দ্রিলা মুখোপাধ্যায় মিত্র কোন্নগরের ছোট বহেরার বাগানপাড়ার বাসিন্দা জয়ন্ত দাসকে ওই সাজা শোনান। বুধবারই তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

Advertisement

জয়ন্তেরা তিন ভাই। বেশ কয়েক বছর আগে তাঁদের বাবা মারা যান। মা রেণুকা দাসকে নিয়ে তাঁরা থাকতেন। জয়ন্ত রেণুকাদেবীর বড় ছেলে। বছর পঞ্চান্নর রেণুকাদেবী খুন হন ২০১২ সালের ১০ মার্চ। মেজো ভাই জহর দাসের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মাকে খুনের অভিযোগে জয়ন্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, টাকা চেয়ে এবং নিজের নামে সম্পত্তি লিখে দেওয়ার দাবিতে জয়ন্ত প্রায়ই মায়ের উপর অত্যাচার করত। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় মায়ের সঙ্গে জয়ন্তর বচসা হয়। তখনই একটি টাঙ্গি দিয়ে সে মাকে এলোপাথাড়ি কোপায়। ঘটনাস্থ‌লেই রেণুকাদেবীর মৃত্যু হয়। শাশুড়ির আর্তনাদে জহরবাবুর স্ত্রী সঙ্গীতাদেবী পাশের ঘর থেকে এসে চোখের সামনে ওই ঘটনা দেখেন। শ্রীরামপুর আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন তিনি।

এ দিন সাজা ঘোষণার আগে বিচারক জয়ন্তর বক্তব্য জানতে চান। জয়ন্ত বলে, ঘটনার দিন তার মাথা যন্ত্রণা করছিল। সে মাকে ওই কথা জানায়। মা তাকে ওষুধ দেন। এর পরে কী ঘটেছিল, তার মনে নেই। সে মানসিক ভাবে অসুস্থ ছিল। ওই ঘটনার আগে সে মানসিক চিকিৎসাকেন্দ্রেও ভর্তি ছিল। পকেট থেকে একটি কাগজ বের করে বিচারককে দেখাতে চায় সে। বিচারক বলেন, এই বিষয়টি এখন আর বিবেচ্য নয়। তার যে মানসিক অসুস্থতা ছিল না, তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। সেই যে তার মাকে খুন করেছে, তা-ও প্রমাণিত। সাজার ব্যাপারে কিছু বলার থাকলে সে যেন বলে। জয়ন্ত তখন দাবি করে, সে নির্দোষ। তাকে যেন মুক্তি দেওয়া হয়।

Advertisement

বিচারক এর পরে জয়দীপবাবুর বক্তব্য জানতে চান। জয়দীপবাবু জানান, জয়ন্ত যে নৃশংস ভাবে রেণুকাদেবীকে খুন করেছে, আদালতে তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। আদালত সেই কথা মাথায় রেখে যেন সাজা দেয়। এর পরেই বিচারক জয়ন্তকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদণ্ডের সাজা শোনান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন