পরিবেশ দিবসে পাটের ব্যাগ উপহার চন্দননগরবাসীকে

আগামী ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আগে আরও একবার নড়ে বসছে পুরসভা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্লাস্টিক বর্জন ও গঙ্গা দূষণ রোধে নিয়মাবলি তৈরি করা হচ্ছে। সঙ্গে চলবে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার প্রয়াসও।

Advertisement

তাপস ঘোষ

চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৮ ০০:৫৫
Share:

শপথ: প্লাস্টিক বর্জনের প্রতিজ্ঞা। নিজস্ব চিত্র

প্লাস্টিক রুখতে এর আগে বহু পদক্ষেপ করেছে পুরসভা। কাজ হয়নি বিশেষ। ছোটখাট মণিহারি দোকান হোক বা প্রতিদিনের আনাজ বাজার— পলিব্যাগ ব্যবহার করেন সকলেই। তারপর সে সব ব্যাগের ঠাঁই হয় নর্দমায়। ফল— ভোগান্ত। প্রতি বর্ষায় নালা উপচে জলে ভাসে চন্দননগরের বহু এলাকা। দূষণের হাত থেকে নিস্তার নেই গঙ্গারও।

Advertisement

আগামী ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসের আগে আরও একবার নড়ে বসছে পুরসভা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্লাস্টিক বর্জন ও গঙ্গা দূষণ রোধে নিয়মাবলি তৈরি করা হচ্ছে। সঙ্গে চলবে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার প্রয়াসও।

শনিবার রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ এবং চন্দননগর পুরসভার যৌথ উদ্যোগে বিভিন্ন ঘাট পরিষ্কার করা হয়। এ দিন চন্দননগরের রানিঘাট-সহ অন্য ঘাটগুলি পরিষ্কারের করেন পুরসভার সাফাই কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যুগ্ম সম্পাদক অভিজিৎ বসু এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত ঘোষ, চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী, পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু।

Advertisement

চন্দননগর-চুঁচুড়া পুরসভার অধীন ঘাটগুলি পরিদর্শন করেন তাঁরা। দূষণ রুখতে প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের ছয় রকম পোস্টার লাগানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তা ছাড়া ঠিক হয়েছে, বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এলাকার ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে সুদৃশ্য পাটের ব্যাগ। মেয়র জানান, ‘‘প্রাথমিক ভাবে আমরা কিছু ব্যাগ বিতরণ করব। পরে ব্যবসায়ী বা ক্রেতারা প্রয়োজনমতো নির্দিষ্ট জায়গা থেকে কিনে ব্যবহার করতে পারবেন।’’ তবে শুধু এই সচেতনতা প্রসারই নয়। রামবাবু জানান, দূষণ রোধে তাঁরা কড়া পদক্ষেপ করতে চলেছেন। এরপর থেকে গঙ্গা বা গঙ্গার পাড় দূষিত করলে জরিমানার কথাও ভাবা হচ্ছে। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চিফ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘বর্তমানে দূষণের মূল কারণ প্লাস্টিক। অপচনশীল এই পদার্থ বর্জনের জন্যই পাটের ব্যাগ ব্যহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি গঙ্গা দূষণ রোধে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। নির্দেশ না মানলে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে রাজ্যের সমস্ত পুরসভা পঞ্চায়েতকে।’’

তবে এই বিশেষ কর্মসূচি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা। চন্দননগরের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এমন পদক্ষেপ এর আগেও হয়েছে। বিশেষ লাভ হয়নি। আবার ব্যবসায়ী তপন দাস বলেন, ‘‘পুরসভার নির্দেশমতো আমরা নির্দিষ্ট ঘনত্বের পলিব্যাগ ব্যবহার করি। কিন্তু মাঝে মধ্যেই তা পাওয়া যায় না। আর এই দামী পাটের ব্যাগ তো আমরা রোজ রোজ দিতে পারব না। ক্রেতাদেরই সচেতন হয়ে সে ব্যাগ নিয়ে আসতে হবে বাড়ি থেকে। সে ব্যাগও যদি বাজারে না মেলে, তবে আর কী করা যাবে!’’

মেয়র অবশ্য বলেছেন, ‘‘সচেতন হতে হবে সাধারণ মানুষকেই। আর ব্যাগের জোগান যাতে ঠিক থাকে সে জন্য তৈরি প্রশাসন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন