নদী দূষণ রুখতে নির্দেশ জাতীয় পরিবেশ আদালতের

নালার জল শোধনে প্রকল্প উলুবেড়িয়ায় 

গঙ্গা-সহ বিভিন্ন নদনদীতে নালা-খালের দূষিত জল এখনও অবাধে মিশছে। এই দূষণ রয়েছে দুই জেলাতেই। সাম্প্রতিক ওই নির্দেশিকার পরে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? খোঁজ নিল আনন্দবাজার এ রাজ্যে গঙ্গার পাশে যে ৪৪টি পুরসভা রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে উলুবেড়িয়াও। এই পুরসভার নোংরা জল দু’টি খালের (বনস্পতি ও মেদিনীপুর) মাধ্যমে উলুবেড়িয়া লকগেটের কাছে গঙ্গায় মেশে।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:৫৫
Share:

দূষিত: আবর্জনায় ভরেছে গঙ্গা। উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুব্রত জানা

হাতে আর ন’মাস সময়। তার মধ্যেই সব নিকাশি নালার জল শোধনের ব্যবস্থা করতে হবে। না হলে আগামী বছরের ১ জুলাই থেকে নালাপিছু মাসে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ গুনতে হবে। গঙ্গা-দূষণ রুখতে জাতীয় পরিবেশ আদালতের সাম্প্রতিক রায়ে নড়ে বসল উলুবেড়িয়া পুরসভা। পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রতিটি নালা ও খালের জল শোধন করা হবে। যাতে দূষিত জল গঙ্গায় না পড়ে। এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করা হচ্ছে।

Advertisement

পুরপ্রধান অভয় দাস বলেন, ‘‘পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকেও আমাদের নিয়মিত চাপ দেওয়া হচ্ছে, যাতে নিকাশি নালা ও খালগুলির জল শোধন করা হয়। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আশা করছি, জাতীয় পরিবেশ আদালতের দেওয়া সময়সীমার মধ্যে আমাদের কাজ হয়ে যাবে।’’

এ রাজ্যে গঙ্গার পাশে যে ৪৪টি পুরসভা রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে উলুবেড়িয়াও। এই পুরসভার নোংরা জল দু’টি খালের (বনস্পতি ও মেদিনীপুর) মাধ্যমে উলুবেড়িয়া লকগেটের কাছে গঙ্গায় মেশে। কিন্তু বছর দশেক আগেও মেদিনীপুর খালে নিকাশি নালার জল পড়ত না। স্টেশন রোডের দু’দিকের দু’টি নিকাশি নালার মাধ্যমে শহরের নোংরা জল জগু সরকারের গোলার কাছে এসে শুধু বনস্পতি খালে পড়ত। কিন্তু দু’টি নালার অধিকাংশ জায়গা জবরদখল হয়ে যাওয়ায় জল নিকাশি সে ভাবে হয় না। নালার জল শহরের কৈজুড়ির কাছে মাঠ ভাসিয়ে গিয়ে পড়ে মেদিনীপুর খালে। বর্তমানে ওই খালের দু’দিকও জবরদখল হয়ে গিয়েছে। জবরদখলকারীরা খালে যে সব বর্জ্য ফেলেন, তা-ও গঙ্গায় মিশছে।

Advertisement

বাউড়িয়া, চেঙ্গাইল প্রভৃতি এ‌লাকার একাধিক নিকাশি নালার দূষিত জল বিভিন্ন খাল হয়ে গঙ্গায় মেশে। বাউড়িয়া হিন্দি হাইস্কুলের কাছে যে খাল আছে, তা-ও গঙ্গায় মিশেছে। গোদের উপরে বিষফোঁড়ার মতো বাউড়িয়া এবং চেঙ্গাইলের বাড়তি সমস্যা হল কারখানার বর্জ্য। এখানে যে সব চটকল আছে, তাদের রাসায়নিক মিশ্রিত নোংরা জল সরাসরি গঙ্গায় গিয়ে পড়লেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ অনেক দিনের। কর্তৃপক্ষগুলির অবশ্য দাবি, তাঁরা নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে জল শোধন করেই গঙ্গায় ফেলেন।

কারাখানার দূষণ নিয়ে পুরপ্রধান জানান, তাঁরা কারখানাগুলিতে বিশেষজ্ঞ নিয়ে যাবেন। যদি দেখা যায়, কারখানা থেরে দূষিত জল সরাসরি গঙ্গায় মিশছে, তা হলে তা বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হবে কর্তৃপক্ষকে। সেটা না করা হলে পুরসভাই সেই কাজ করবে। তার জন্য খরচ আদায় করা হবে কারখানাগুলির কাছ থেকেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন