আইনের ফাঁসে দশ দিনের শিশু হাসপাতালেই

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরাও জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে তাঁরা জেনেছেন এ ক্ষেত্রে টাকা লেনদেন হয়নি। বাড়িতে প্রসবের পর মা স্বেচ্ছায়, শুধু মেয়ের ভাল থাকার শর্তেই তাকে দিয়েছেন অন্য দম্পতির হাতে। কিন্তু পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণেই উত্তরপাড়া থানার পুলিশ চাইল্ড লাইনে খবর দেয়।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৮ ০৩:৪৬
Share:

গরিব ঘরের এক অবিবাহিত তরুণী জন্ম দিয়েছিলেন শিশুকন্যার। তাঁর দাবি, পিতৃপরিচয়হীন সে মেয়ের জীবন সুরক্ষিত করতেই এ‌লাকার বাসিন্দা এক মহিলার মধ্যস্থতায় তাকে তুলে দিয়েছিলেন হাও়ড়ার এক নিঃসন্তান দম্পতির হাতে।

Advertisement

কিন্তু জন্মের দশ দিনের মধ্যেই শিশুটি হারিয়েছে নিজের মা, এমনকি পালিকা মায়ের কোলও। নিয়মের বেড়াজালে আপাতত তার ঠাঁই হয়েছে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেলের শিশু বিভাগে— চাইল্ড লাইনের তত্ত্বাবধানে।

চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরাও জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে তাঁরা জেনেছেন এ ক্ষেত্রে টাকা লেনদেন হয়নি। বাড়িতে প্রসবের পর মা স্বেচ্ছায়, শুধু মেয়ের ভাল থাকার শর্তেই তাকে দিয়েছেন অন্য দম্পতির হাতে। কিন্তু পদ্ধতিগত ত্রুটির কারণেই উত্তরপাড়া থানার পুলিশ চাইল্ড লাইনে খবর দেয়।

Advertisement

পুলিশ হাওড়ার আমতা থেকে ওই বাচ্চাটিকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে দিন দুয়েক আগে। রাখা হয় হাসপাতালে। উত্তরপাড়া হাসপাতালের সুপার দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিশুটি শারীরিক ভাবে একেবারেই সুস্থ। তবে দশ দিনের শিশুর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন তাই স্পেশ্যাল কেয়ারে রাখা হয়েছে।’’

আইনি প্রক্রিয়া অবশ্য এখনও শুরু হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, জেলা চাইল্ড লাইন নির্দিষ্ট অভিযোগ দায়ের করার পরই পুলিশি ব্যবস্থার প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু অভিযোগ দায়ের হবে কার বিরুদ্ধে?

চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, যে মহিলার মধ্যস্থতা শিশুটিকে হাওড়া নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাঁর ভূমিকা খতিয়ে দেখতেই পুলিশকে জানাবেন কর্তৃপক্ষ। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার বলেন, ‘‘শিশু দত্তক বা হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আইন খুবই ক়ড়া। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি অন্য রকম হলেও আইন তো নিজের পথেই চলবে।’’

চিকিৎসক শিউলি মুখোপাধ্যায় এ বিষয়ে বলেন, ‘‘বিষয়টি পুরোপুরি আইনি। আবেগের বশে বিধি লঙ্ঘন করা চলে না। আশা রাখি শিশুটি একদিন সুস্থ জীবনে ফিরতে পারবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন