এই ট্রলি ব্যাগেই সুচেতা চক্রবর্তীর দেহাংশ মিলেছিল।—ফাইল চিত্র।
বছর দু’য়েক আগে দুর্গাপুরের বাসিন্দা সুচেতা চক্রবর্তী এবং তার শিশুকন্যাকে হত্যার মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিলেন ব্যাগের দোকানের মালিক।
২০১৫ সালের ২৮ অগস্ট দুর্গাপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার (এখন সাসপেন্ডেড) সমরেশ সরকার ‘প্রেমিকা’ সুচেতা এবং তাঁর চার বছরের মেয়ে দীপাঞ্জনাকে খুন করেন বলে অভিযোগ ওঠে। সুচেতার দেহ তিন টুকরোয় কেটে তিনটি ব্যাগে ভরেছিলেন সমরেশ। দীপাঞ্জনার দেহ ভরেন অন্য একটি ব্যাগে। পরের দিন সকালে ব্যারাকপুর থেকে শেওড়াফুলির মাঝে গঙ্গায় ভুটভুটি থেকে সেগুলি ফেলার সময় যাত্রীদের হাতে ধরা পড়ে যান। খুনের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। দেহাংশ-ভরা তিনটি ব্যাগ গঙ্গা থেকে উদ্ধার হয়। তার মধ্যে মেরুন রঙের একটি ট্রলিব্যাগ ছিল।
মামলার সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ব্যাগটি দুর্গাপুরের বেনাচিতির একটি দোকান থেকে কেনা হয়েছিল। বিলে ক্রেতার নাম লেখা হয়েছিল ‘এস মুখার্জি’। তাতে যে মোবাইল নম্বরটি দেওয়া ছিল, সেটি সুচেতার। তদন্তকারীরা বিলের কার্বন কপিটি বাজেয়াপ্ত করেন। সুচেতার শ্বশুরবাড়ির পদবিও ছিল ‘মুখোপাধ্যায়’।
সমরেশ যে দিন ধরা পড়েন, অর্থাৎ ২৯ অগস্ট সন্ধ্যায় সমরেশকে নিয়ে বেনাচিতির ওই ব্যাগের দোকানে যায় পুলিশ। দোকান-মালিক রবীন্দ্রনাথ দত্ত সমরেশকে চিহ্নিত করেন। শ্রীরামপুর আদালতে গোপন জবানবন্দিও দেন তিনি। সোমবার আদালতে সাক্ষ্য দিতে এসে রবীন্দ্রনাথবাবু জানান, ২৮ তারিখ রাতে সমরেশ দোকানে গিয়ে একটি বড় ট্রলি ব্যাগ দিতে বলেন। তাঁকে দু’টি ব্যাগ দেখানো হয়। তার মধ্যে মেরুন ট্রলিব্যাগটি তিনি পছন্দ করেন। নগদ চার হাজার ছ’শো টাকায় ব্যাগটি তিনি কেনেন। ৪৬টি ১০০ টাকার নোটে টাকা দেন। পরের দিন সংবাদমাধ্যমে সুচেতা হত্যাকান্ডের খবরে ধৃত সমরেশের ছবি দেখে তাঁকে চিনতে পারেন। বুঝতে পারেন, বিলের ‘এস মুখার্জি’ আদতে সমরেশ সরকার।