বন্ধ হচ্ছে না শাসকের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

ফের পঞ্চায়েত সমিতিতে অনাস্থা

দলে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বারবার নেতা-কর্মীদের সতর্ক করছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দল বন্ধ হচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৬ ০০:৫৩
Share:

দলে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য বারবার নেতা-কর্মীদের সতর্ক করছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের গোষ্ঠী-কোন্দল বন্ধ হচ্ছে না।

Advertisement

শুক্রবার ফের ওই সমিতির দলীয় সভাপতির বিরুদ্ধে তৃণমূল সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ল হাওড়া সদরের মহকুমাশাসক রেশমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার সভাপতির বিরুদ্ধে অনাস্থা জমা পড়ল।

তবে, এই অনাস্থা নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। প্রথমত, যাঁর নেতৃত্বে সভাপতি মহম্মদ হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অনাস্থা, সেই মহম্মদ ইব্রাহিমকে দল থেকে আগেই বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তাঁর কোনও কথাই চলবে না বলে দাবি করেছেন সমবায়মন্ত্রী তথা দলের হাওড়া জেলা সদরের সভাপতি অরূপ রায়। তিনি বলেন, ‘‘শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমতি না নিয়ে অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। ইব্রাহিমকে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ভাবে অনাস্থা প্রস্তাব আনা যায় না। বর্তমান সভাপতির এখনও আড়াই বছর পূর্ণ হয়নি।’’ পাল্টা ইব্রাহিমের দাবি, ‘‘দল থেকে বহিষ্কারের কোনও চিঠি পাইনি। আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করেই অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে। সমিতিতে আমাদের ২৪ জন সদস্যের মধ্যে ২১ জন প্রস্তাবে সই করেছেন। সভাপতি দু’বছর কোনও কাজ করেননি।’’

Advertisement

প্রথমবার ২০১৪ সালে এই পঞ্চায়েত সমিতির তৎকালীন সভাপতি ছিলেন ইব্রাহিমই। দলেরই একটি গোষ্ঠীর আনা অনাস্থায় অপসারিত হন তিনি। নতুন সভাপতি হন হাফিজুর। অভিযোগ উড়িয়ে তাঁর দাবি, ‘‘পদে বসার পর থেকে যথেষ্ট কাজ করেছি।’’ যে সময়ে অনাস্থা আনা হয়েছে, তা নিয়ে মন্ত্রীর মতো প্রশ্ন তোলেন হাফিজুরও। মহকুমাশাসক অনাস্থা প্রস্তাব সংক্রান্ত চিঠির প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘প্রস্তাবের আইনগত বৈধতা খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

মাস দুয়েক আগে পোলগুস্তিয়ায় বেআইনি ভাবে গাছ কাটার অভিযোগ ওঠে ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে। হাফিজুর সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে তাঁকে বেধড়র মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ। ইব্রাহিমকে পুলিশ গ্রেফতার করে। ইব্রাহিম মারধরের কথা মানেননি। ১৮ দিন হাজতবাসের পরে তিনি জামিন পান। তার পরেই ইব্রাহিমকে দল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন মন্ত্রী অরূপবাবু।

এর পরেও ইব্রাহিমের নেতৃত্বে যে ভাবে পঞ্চায়েতের দলীয় সদস্যেরা অনাস্থা প্রস্তাবে সই করেছেন, তাতে কেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলেরই অন্দরে। বিষয়টি তাঁরা অরূপবাবুকেও জানিয়েছেন। অরূপবাবু জানান, তিনি কাল, মঙ্গলবার দলের সব পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য এবং কর্মাধ্যক্ষকে ডেকে পাঠিয়েছেন। সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ পরিমল হাইত অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘অনাস্থা প্রস্তাবের খসড়া যখন হয়েছিল, তখন ইব্রাহিমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। এখন দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা মেনে নেব।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement