রামেশ্বরনগর-রাধানগর খাল

সংস্কার হয় না খাল, বিপর্যস্ত নিকাশি ও সেচ

নামেই নিকাশি খাল। পানা জমে, স্রোত হারিয়ে তা আজ মজে গিয়ে মৃতপ্রায়। কোথাও কোথাও তা এতটাই সরু হয়ে গিয়েছে যে খাল বলে বোঝা মুশকিল। নিকাশি ব্যবস্থা তো বিপর্যস্তই, চাষের কাজে খালের জলে নির্ভর করতে যে চাষিরা তাঁদের এখন মাথায় হাত।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাউড়িয়া শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৬ ০১:১২
Share:

আবর্জনায় মজে গিয়েছে নিকাশি নালা। — সুব্রত জানা।

নামেই নিকাশি খাল। পানা জমে, স্রোত হারিয়ে তা আজ মজে গিয়ে মৃতপ্রায়। কোথাও কোথাও তা এতটাই সরু হয়ে গিয়েছে যে খাল বলে বোঝা মুশকিল। নিকাশি ব্যবস্থা তো বিপর্যস্তই, চাষের কাজে খালের জলে নির্ভর করতে যে চাষিরা তাঁদের এখন মাথায় হাত।

Advertisement

বাউড়িয়ার রামেশ্বরনগর-রাধানগর নিকাশি খালের এমন দূরবস্থায় প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন স্থানীয় মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে কোনওরকম সংস্কার না হওয়াতেই খালের অস্তিত্ব বিপন্ন। তবে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন উলুবেড়িয়া পুর কর্তৃপক্ষ।

উলুবেড়িয়া পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নিকাশি খালটি ভাগীরথী নদী থেকে শুরু হয়ে বাউড়িয়ার রামেশ্বরনগর, রাধানগর, ফোর্ট গ্লস্টার, খাজুরি-সহ উলুবেড়িয়া পুরসভার বিভিন্ন এলাকা এবং উলুবেডিয়া ২ ব্লক ও পাঁচলা ব্লকের কয়েকটি পঞ্চায়েত এলাকার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে আমতার দশ নম্বর পোলের কাছে কানা নদীতে মিশেছে। বেশ কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ এই খালে মাছ ধরে জেলেরা জীবিকা নির্বাহও করেছেন এক সময়। উলুবেড়িয়া পুর এলাকার নিকাশি ব্যবস্থাও এর উপরে নির্ভরশীল। এই খাল দিয়ে বাউড়িয়া এলাকার কমপক্ষে ৫-৬টি ওয়ার্ডের জল নিকাশি হয়। তা ছাড়া উলুবেড়িয়া ২ নম্বর ও পাঁচলা ব্লকের কয়েকটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বর্ষার জল বের হতেও এই খাল ভরসা।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক সময় খাল যথেষ্ট গভীর ছিল। গঙ্গার সঙ্গে যোগ থাকায় জোয়ার-ভাটা খেলত। খালের জলে চাষে সেচের কথা ভেবে খালের মুখে একটি স্লুইস গেট বসিয়েছিল প্রশাসন। গরমের সময় জোয়ারের জল স্লুইস গেট তুলে ঢুকিয়ে নেওয়া হত। আবার বর্ষায় গঙ্গার জলস্তর বেড়ে গেলে স্লুইস গেট বন্ধ রাখা হত। একই ভাবে খালের বেশি জল স্লুইস গেট খুলে বের করে দেওয়া হতো। এ ভাবেই নিকাশি এবং সেচের কাজে ব্যবহার হতো খালের জল।

কিন্তু দিনের পর দিন কোনওরকম সংস্কার না হওয়ায় পলি জমে, পানায় খালের অবস্থা সঙ্গীন। অনেক জায়গাতেই খাল সরু হয়ে গিয়েছে। মজে যাওয়ায় আগের মতো আর জোয়ার-ভাটা খেলে না। নষ্ট হয়ে গিয়েছে স্লুইস গেটটিও।

পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান আব্বাসউদ্দিন খান বলেন, ‘‘বছর কয়েক আগে একবার খাল সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু আইনি সমস্যায় তা শেষ করা যায়নি। তা ছাড়া খালটিও বেশ দীর্ঘ। পুরো খালটি সংস্কারের টাকা পুরসভার নেই। বিষয়টি সেচমন্ত্রীকে জানানো হবে।’’

স্থানীয় মানুষের দাবি, খাল দিয়ে জলও আর ঠিকমত বেরোতে পারে না। ফলে বাউড়িয়ার বিস্তীর্ণ এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। ফলে বর্ষায় জলবন্দি হওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। স্থানীয় বাসিন্দা বাসু চরণ, তুষারকান্তি মণ্ডল, সমিত চরণ বলেন, ‘‘খালে স্রোত না থাকায় দীর্ঘদিন নোংরা জল জমে থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। অবিলম্বে পুরসভা খালটি সংস্কারের ব্যবস্থা করুক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন