ত্রাতা: শ্রবণ কুমার। —নিজস্ব চিত্র।
জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছিলেন এক মহিলা। পাড় থেকে চেঁচাচ্ছেন লোকজন। এমন দৃশ্য থেকে এক মুহূর্ত নষ্ট করেননি ফেরিঘাটে দাঁড়ানো শ্রবণ কুমার। গঙ্গায় ঝাঁপিয়ে পড়ে মহিলাকে ডাঙায় তুলে আনলেন বছর একুশের ওই মাঝি। মঙ্গলবার সকালে এমন ঘটনারই সাক্ষী রইল শেওড়াফুলি ফেরিঘাট।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঝবয়সী ওই মহিলার বাড়ি জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাটে। এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি হঠাৎই শেওড়াফুলির নিস্তারিনী কালীবাড়ি ঘাট থেকে গঙ্গায় ঝাঁপ দেন। এর পরেই ওই ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জলের তোড়ে ওই মহিলা বৈদ্যবাটির দিকে ভেসে যেতে থাকেন। প্রাথমিক বিহ্বলতা কাটিয়ে উঠে পাড়ে দাঁড়ানো মানুষজন চিৎকার করতে শুরু করেন। তার তখনই জলে ঝাঁপ দেন শ্রবণ।
শ্রবণ জল থেকে তুলে আনার পরে মহিলাকে ঘাটে বসানো হয়। খবর যায় শেওড়াফুলি ফাঁড়িতে। পুলিশ এসে মহিলাকে ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। মহিলার বাড়িতে খবর দেওয়া হয়। পরে বাড়ির লোকজন এলে তাঁদের হাতে মহিলাকে তুলে দেওয়া হয়। তার আগে পুলিশ অফিসাররা মহিলার সঙ্গে কথা বলেন। মহিলা জানান, তাঁর স্বামী মানসিক অসুস্থ। সেই কারণে ইদানিং তিনিও অবসাদে ভুগছিলেন। সেই কারণেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত।
বছর একুশের শ্রবণের বাড়ি আদতে বিহারের বেগুসরাইতে। বেশ কিছু দিন ধরে তিনি শেওড়াফুলি-ব্যারাকপুর ফেরিঘাটে ভুটভুটি চালান। এখানেই থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘ওই সময় ঘাটেই ছিলাম। চেঁচামেচি শুনে তাকিয়ে দেখি, এক জন ভেসে যাচ্ছেন। গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে চুলের মুঠি ধরে ওঁকে টেনে তুলি।’’ এ জন্য অবশ্য কৃতিত্ব নিতে চান না যুবকটি। জানিয়ে দেন, এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে তিনি আবারও ঝাঁপাতে তৈরি।