Lynching

সালিশিতে প্রৌঢ়াকে পিটিয়ে মারার নালিশ

পুলিশ জানিয়েছে, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য কুতুবউদ্দিন মল্লিক, তাঁর ভাই সামসুদ্দিন মল্লিক-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২০ ০৪:০৯
Share:

শোকার্ত: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন আসরা শেখ বেগমের (ইনসেটে) পরিজনরা। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

সালিশি সভা ডেকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল আরামবাগের বাসুলিচক গ্রামে। পারিবারিক একটি সমস্যা নিয়ে শনিবার রাতে ছেলে ও স্বামীকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন আসরা শেখ বেগম (৫১) নামে ওই প্রৌঢ়া। সেই সময়ই তাঁকে পিটিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ পরিজনদের।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য কুতুবউদ্দিন মল্লিক, তাঁর ভাই সামসুদ্দিন মল্লিক-সহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ৯টা নাগাদ সালিশি সভায় বিচারের জন্য ডাক পড়েছিল আসরার ছেলে শেখ আসাদুল আলির। তিনি কর্মসূত্রে চেন্নাইতে থাকেন। পঞ্চায়েত সদস্যর ভাই সামসুদ্দিনের অভিযোগ ছিল, ওই যুবক চেন্নাই থেকে ফোনে তাঁেক খুনের হুমকি দিচ্ছিলেন। সেই অভিয়োগ নিয়েই শনিবার সালিশি সভা ডাকা হয়।

Advertisement

ওই সভাতেই আসাদুলকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ছেলের পক্ষ নিয়ে তাঁর বাবা শেখ আরসেদ আলি কথা বলতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। ছেলে এবং স্বামীকে মারধর করার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আসরা বেগম। ছেলে আর স্বামীকে মারের হাত থেকে বাঁচাতে গিয়ে ক্ষুব্ধ জনতার মাঝে পড়ে যান তিনি। তঁাকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। কিছু পরে রক্তাক্ত অবস্থায় আসরাকে মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে জানান।

শেখ আসাদুলের অভিযোগ, “মা আমাদের বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাঁর পেটে এবং বুকে লাথি মারা হয়। তাতেই মায়ের মৃত্যু হয়েছে।’’ অভিযুক্ত কুতুবউদ্দিন মল্লিকের দাবি, ‘‘আসাদুলকে গ্রামের অনেকে চড় মেরেছে ঠিকই। কিন্তু তার মায়ের গায়ে কেউ হাত দেয়নি। তিনি ভিড়ে ঢুকেই মাটিতে বসে পড়েন। আমি নিজে গাড়ির ব্যবস্থা করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”

আসাদুলের অভিযোগ, “সামসুদ্দিন আর তার কয়েকজন বন্ধু মিলে আমার বোনকে কয়েক মাস ধরে উত্ত্যক্ত করছিল। বাধ্য হয়ে ওর স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিেয়ছিলেন বাবা। সামসুদ্দিন আমার প্রতিবেশী এবং ছোটবেলার বন্ধুও। তাকে ফোনে এ সব করতে নিষেধ করেছিলাম।’’

কিন্তু আসাদুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আইনের দ্বারস্থ না হয়ে সালিশি সভা ডাকা হল কেন? পঞ্চায়েত সদস্য কুতুবউদ্দিনের সাফাই, “এটাকে সালিশি সভা না বলে আলোচনাসভা বলাই ভাল। আসলে গ্রামের মানুষ মামলায় জড়াতে চান না। ছোট বিষয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে আলোচনার মাধ্যমে মিটে যায়।”

তৃণমূলের হুগলি জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, “কোনও অশান্তি মানা হবে না। কাউকে সালিশি সভা করার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। পুলিশকে যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন