শহরকে নয়া চেহারা দিতে উদ্যোগ পুরসভার

উত্তরপাড়া জুড়ে ওপেন এয়ার জিম

ঘড়ি ধরে জিমে যাওয়ার সময় নেই অনেকেরই। তাই এ বার উত্তরপাড়া জুড়ে গড়ে উঠছে ‘ওপেন এয়ার জিম’। অর্থাৎ, খোলা আকাশের নীচে শরীরচর্চার যাবতীয় আয়োজন। যে কেউ যে কোনও সময়ে তা ব্যবহার করতে পারবেন এবং নিখরচায়!

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৮ ০১:৪২
Share:

কসরত: চলছে শরীর চর্চা। ছবি: দীপঙ্কর দে

ঘড়ি ধরে জিমে যাওয়ার সময় নেই অনেকেরই। তাই এ বার উত্তরপাড়া জুড়ে গড়ে উঠছে ‘ওপেন এয়ার জিম’। অর্থাৎ, খোলা আকাশের নীচে শরীরচর্চার যাবতীয় আয়োজন। যে কেউ যে কোনও সময়ে তা ব্যবহার করতে পারবেন এবং নিখরচায়!

Advertisement

শহরের নাগরিকদের সুস্থ রাখতে এমনই পরিকল্পনা করেছে উত্তরপাড়া পুরসভা। মাখলা হাইস্কুলের কাছে এবং কোতরং এলাকায় দু’টি ওপেন এয়ার জিমের কাজ পরীক্ষামূলক ভাবে হয়েও গিয়েছে। তার মধ্যে একটি উদ্বোধন করে গিয়েছেন সাংসদ কল্যাণ মুখোপাধ্যায়। পুরসভা সূত্রের খবর, আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে পুরসভার মোট ২৪টি ওয়ার্ডে ২০টি এমন জিম তৈরির কাজ শেষ করার সময়সীমা হাতে নেওয়া হয়েছে। হুগলিতে এমন উদ্যোগ এই প্রথম। তবে, হাওড়া শহরে এমন জিম হয়েছে। রয়েছে কলকাতাতেও।

গোটা পরিকল্পনাটি পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের। তিনি জানান, পুরসভার কাজের একটি পুরস্কার আনতে মেক্সিকো গিয়ে এই ধরনের জিম দেখে তিনি উদ্বুদ্ধ হন। দিলীপের কথায়, ‘‘এখন মানুষের যা কাজের চাপ, তাতে চিকিৎসকেরা বলছেন একটু ব্যায়াম জরুরি। এখন মাঠ কমে যাওয়ায় এই ধরনের জিমই ভরসা। এই জিমে কাউকে একটা পয়সাও দিতে হবে না।’’

Advertisement

ভোরবেলা বা বিকেলে উত্তরপাড়ায় বহু মানুষকেই গঙ্গার ধারে বা পার্কে স্বাস্থ্য রক্ষায় হাঁটতে দেখা যায়। জিমে যাওয়ার মতো সময় তাঁদের হাতে নেই। তা ছাড়া, অনেক মধ্যবয়সী মানুষ তরুণ-যুবকদের সঙ্গে জিমে ভর্তি হতে দ্বিধা বোধও করেন। তাই কাজের ফাঁকে তাঁদের শরীরচর্চার এই নয়া উদ্যোগ শহরে।

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, রাস্তার পাশে কোনও ক্লাব, সংগঠন বা ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৫ বাই ২০ ফুটের ফাঁকা জমি পেলেই সেখানে ওপেন জিম তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। তাতে কোনও অর্থমূল পুরসভাকে দিতে হচ্ছে না। শরীরচর্চার জন্য প্রয়োজনীয় পাঁচ-ছ’টি যন্ত্র থাকছে। যেমন, হাঁটার জন্য ওয়াকার, কোমরের ব্যায়ামের জন্য টুইস্টার ইত্যাদি। থাকছে হাল্কা ওজন তোলার ব্যবস্থাও। খোলা আকাশের নীচে সেগুলি থাকলেও ঝড়বৃষ্টিতে কোনও ক্ষতি হবে না বলে পুরকর্তাদের দাবি। এক-একটি জিম তৈরিতে খরচ হচ্ছে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। তৈরির পর তিন বছর পুরসভা ওই জিম রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেবে। পরবর্তী সময়ে যে জমিতে জিম, সেই জমি-মালিকদেরই দেখতে হবে। যে কেউ কাজের ফাঁকে সময় পেলে কিছুক্ষণের জন্য এই জিমে শরীরচর্চা করে ফিরে যেতে পারবেন। জিম ব্যবহারে কোনও শর্ত আরোপ করা হচ্ছে না।

পুরসভার এই নয়া উদ্যোগে উৎসাহিত শহরের অনেকেই। যেমন, মালিকপাড়া মাঠ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছি। ডাক্তার রোজ নিয়ম করে হাঁটতে বলেছেন। গঙ্গার ধারে যাই। এ বার যদি রাস্তাতে জিম পাই, একবার চেষ্টা করে দেখতেই পারি।’’ এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘নতুন ব্যবস্থা তো ভাল বলেই মনে হচ্ছে। আশা করি, ওখানে গিয়ে উপকার পাব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন