হাওড়া পুরসভা

অধিবেশনে ‘হেনস্থা’ বিরোধীদের

বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে শাসকদলের সমালোচনা করায় কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হল বিরোধীদের। এমনই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল হাওড়া পুরসভায়। বক্তৃতার সময়ে বিরোধী কাউন্সিলরের সামনে দাঁড়িয়ে সমানে চিৎকার করা হল। কিছু বলতে না দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত বাজেট বিতর্ক বয়কট করে একসঙ্গে কক্ষ ত্যাগ করেন সিপিএম ও বিজেপির চার কাউন্সিলর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৫ ০১:৪৯
Share:

বাজেট বিতর্কে অংশ নিয়ে শাসকদলের সমালোচনা করায় কার্যত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হল বিরোধীদের। এমনই নজিরবিহীন ঘটনা ঘটল হাওড়া পুরসভায়। বক্তৃতার সময়ে বিরোধী কাউন্সিলরের সামনে দাঁড়িয়ে সমানে চিৎকার করা হল। কিছু বলতে না দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত বাজেট বিতর্ক বয়কট করে একসঙ্গে কক্ষ ত্যাগ করেন সিপিএম ও বিজেপির চার কাউন্সিলর।

Advertisement

শনিবার তৃণমূল শাসিত হাওড়া পুরবোর্ড ২০১৫-১৬ সালের বাজেট পেশ করে। সোমবার বাজেট বিতর্কের জন্য নির্ধারিত ছিল। বিতর্কের শুরুতেই এ দিন বিরোধীদের বলার সুযোগ দেয় শাসক দল। প্রথম বক্তব্য রাখতে আসেন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর আসরাফ জাভেদ। তিনি বক্তৃতা দিতে গিয়ে অভিযোগ করেন পুরসভায় চাকরি নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই গত এক বছরে হাজার হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। এই নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ।

সিপিএম কাউন্সিলরের এই বক্তব্যের পরেই তাঁর দিকে ‘রে রে’ করে তেড়ে যান তৃণমূলের দুই মেয়র পারিষদ গৌতম চৌধুরী, শ্যামল মিত্র-সহ আরও কয়েক জন। অভিযোগ, অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিক ও চিত্র সাংবাদিকদের সামনেই বর্ষীয়ান ওই কাউন্সিলরকে ধাক্কা মারতে মারতে অধিবেশন কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়। এই দৃশ্য দেখে সঙ্গে সঙ্গে অধিবেশন বয়কট করে বেরিয়ে যান বাকি বিরোধী কাউন্সিলরেরা।

Advertisement


বাজেট বিতর্কে বক্তৃতার সময়ে সিপিএম কাউন্সিলর আসরাফ জাভেদকে বাধা
তৃণমূলের দুই মেয়র পারিষদ শ্যামল মিত্র ও গৌতম চৌধুরীর। সোমবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

বাইরে এসে আসরাফ জাভেদ বলেন, ‘‘হাওড়া পুরসভায় লাগাতার অগণতান্ত্রিক কাজ চলছে। কোনও নীতির বালাই নেই। প্রতিবাদ করলে ঘাড় ধাক্কা জোটে। যা আজকে আমার জুটেছে।’’

হাওড়া পুরসভার ৫০টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূলের দখলে ৪৫টা আসন। বাকি পাঁচটি আসনের মধ্যে সিপিএম ও বিজেপির রয়েছে ২টি করে। একটি রয়েছে কংগ্রেসের। এ দিন কংগ্রেস ছাড়া বাকি ৪ জন বিরোধী কাউন্সিলর বাজেট বির্তকে অংশ নেবেন বলে উপস্থিত ছিলেন। বিরোধীদের অভিযোগ, যখন এই ঘটনা ঘটে তখন ওই অধিবেশন উপস্থিত ছিলেন মেয়র রথীন চক্রবর্তী ও চেয়ারম্যান অরবিন্দ গুহ। নিয়মানুযায়ী চেয়ারম্যান তাঁর দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারতেন। কিন্তু সভার মধ্যে এই ধরনের নজিরবিহীন ঘটনা ঘটলেও তিনি নীরব দশর্কের ভূমিকায় ছিলেন বলে অভিযোগ।

চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘সভা বানচালের জন্য বিরোধীরা গোলমাল পাকিয়েছে। আমাদের কেউ কোনও ভাবে বাধা দেয়নি।’’ একই বক্তব্য মেয়রেরও। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিরোধীদের ওয়ার্ডে সব থেকে বেশি কাজ করেছি। অথচ ওরা স্বীকার করছে না। উপরন্তু এ দিন সভায় গোলমাল পাকালো।’’

কিন্তু বিরোধীরা তাঁদের বক্তব্য রাখার গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে কেন বঞ্চিত হলেন তার জবাব অবশ্য দেননি মেয়র। তিনি বলেন, ‘‘যা হয়েছে তা কিছুই নয়। ওঁরা গোলমাল না পাকালে এ সব হত না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন