সরকারি প্রকল্পের টাকা পেতে দিতে হয় ‘কমিশন’

সরকারি প্রকল্পে টাকা পেলেই উপভোক্তাদের ‘কমিশন’ দিতে হচ্ছে শাসক দলের নেতাদের, এমনই অভিযোগে ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে বি়ডিও সমীরণ ভট্টাচার্য অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

সুশান্ত সরকার

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৭ ০০:৪৩
Share:

সরকারি প্রকল্পে টাকা পেলেই উপভোক্তাদের ‘কমিশন’ দিতে হচ্ছে শাসক দলের নেতাদের, এমনই অভিযোগে ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।

Advertisement

তৃণমূল অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে বি়ডিও সমীরণ ভট্টাচার্য অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্প-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের উপভোক্তারা এই অভিযোগ করেছেন পান্ডুয়া ব্লকের নানা এলাকায়। বিষয়টি জানিয়ে পান্ডুয়া বিডিও অফিসে অভিযোগ করেছে বিজেপি। যদিও কোনও অভিযোগই মানেনি তৃণমূল।

Advertisement

উপভোক্তারা ওই অভিযোগ নিয়ে এখনও প্রশাসনের দ্বারস্থ হননি। এর পিছনে তাঁরা হামলার আশঙ্কা করছেন। তবে নিজেদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভও গোপন রাখেননি। তাঁদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে উপভোক্তারা প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার পরে সেই থেকে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের ভাগ দিতে হচ্ছে। কেউ দিতে না চাইলে চলছে হুমকি এবং ভয় দেখানো হচ্ছে। এমনকী, শাসক ঘনিষ্ঠ কয়েকটি অবস্থাপন্ন পরিবারও এই প্রকল্পের সুবিধা নিচ্ছে। পান্ডুয়ার সিমলাগড়-ভিটাসিন, ক্ষীরকুণ্ডি-নামাজগ্রাম, পাঁচগড়া-তোরগ্রাম পঞ্চায়েতের মতো কয়েকটি এলাকায় এমন চলছে বলে অভিযোগ।

নিয়ম অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পের উপভোক্তাদের গীতাঞ্জলি-সহ বাড়ি নির্মাণের অন্যান্য প্রকল্পগুলির সুবিধা পাওয়ার কথা নয়। কিন্তু শাসক দল ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সেই সুবিধা পাচ্ছেন বলে অভিযোগ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক উপভোক্তার অভিযোগ, ‘‘এখন তৃণমূল নেতাদের সুপারিশ ছাড়া কোনও সরকারি প্রকল্পের টাকা পাওয়া সম্ভব নয়। যিনি সুপারিশ করে দিচ্ছেন, তাঁকে মোটা অঙ্কের ‘কমিশন’ দিতে হচ্ছে।’’ তাঁদের ক্ষোভ, গরিব মানুষের জন্য বরাদ্দ টাকার বেশিরভাগ যাচ্ছে কয়েকজন তৃণমূল নেতাদের পকেটে।

বিজেপির পান্ডুয়া-১ ব্লকের মণ্ডল সভাপতি দেবপ্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখানকার ১৬টি পঞ্চায়েত এলাকা থেকে উপভোক্তারা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির
অভিযোগ করেছেন।’’

একই সুর শোনা গিয়েছে পান্ডুয়ার সিপিএম বিধায়ক আমজাদ হোসেনের গলাতেও। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূল এখানে গরিবদের টাকা লুঠ করছে। তৃণমূল নেতারা নিজের নামে প্রধানমন্ত্রী আবাসন যোজনার টাকা তুলে নিচ্ছেন।’’ মাস কয়েক আগে সিপিএম পরিচালিত পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির কয়েকজন সদস্য দলবদল করেছিলেন। তার জেরে সমিতির দখল যায় তৃণমূলের হাতে। তার পর থেকে এমন ঘটনা বেড়েছে বলে অভিযোগ।

সব অভিযোগ উড়িয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তৃণমূলের অসিত চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এই ব্লকে তৃণমূল পরিচালিত কোনও পঞ্চায়েত এলাকায় এমন অভিযোগ নেই। যদি কোনও অভিযোগ পাওয়া যায় তা হলে অভিযুক্তকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement