বিকিকিনি: ধনতেরস উপলক্ষে সেজে উঠেছে চন্দননগরের সোনার দোকান
তেরো সংখ্যা নিয়ে অনেকের মনেই কুসংস্কার রয়েছে। কিন্তু সেই তেরোই যেন এখন হয়ে উঠেছে শুভ! সৌজন্যে ‘ধনতেরস’।
ধন অর্থাৎ সম্পদ আর ‘তেরস’ হল ত্রয়োদশী অর্থাৎ হারিয়ে যাওয়া লক্ষ্মীকে কার্তিক মাসের তেরো তারিখে ফেরানোর উৎসবই ‘ধনতেরস’। অবাঙালি সম্প্রদায়ের এই আচার এখন একেবারে হয়ে উঠেছে বাঙালি জীবনের অঙ্গ। তাই সোমবার সকাল থেকে দুই জেলাতেই গ্রাহকদের জন্য সেজে উঠেছে অসংখ্য গয়নার দোকান। জিনিস কিনলে উপহারের ডালি সাজিয়ে রেখেছেন দোকানদাররাও। হাওড়ার উলুবেড়িয়া, বাগনান, আন্দুল ও ডোমজুড়ের পাশাপাশি চুঁচুড়ার খড়ুয়াবাজার, আখনবাজার, পিপুলপাতি, চন্দননগরের বাগবাজার, জ্যোতির মোড়, শ্রীরামপুরের বটতলা, মাহেশ, উত্তরপাড়া-সর্বত্র ছবিটা কমবেশি একই।
ভিড় বেশি মূলত সোনার দোকানেই। উত্তরপাড়ার এক সোনার দোকানের বিক্রেতা জানালেন, চলতি বছরে ব্যবসা খুব ভাল হয়নি। তবে সোমবার দোকানে ভিড় ছিল ভালই। তিনি জানান, ভারী সোনার গয়নার বদলে এখন অধিকাংশেরই পছন্দ হালকা সোনার কানের দুল বা চেন।
চন্দননগরের একটি সোনার দোকানে মায়ের সঙ্গে এসেছিলেন বছর পঁচিশের শ্রেয়সী গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি জানালেন, আগামী ফাল্গুনে তাঁর বিয়ে। সেই গয়না তিনি কিনলেন এ দিনই। দামের কারণে অনেকেই সোনা ছেড়ে ঝুঁকছেন রুপোর দিকে। কলেজ পড়ুয়া রূপসা বন্ধুদের সঙ্গে এসেছিলেন আন্দুলের একটি সোনার দোকানে। ছোট্ট একটা রুপোর নাকছাবি পছন্দ করে রূপসা বলেন, ‘‘হাতখরচ যা পাই, তা দিয়ে সোনা কেনা যায় না। তাই রুপোই কিনলাম।’’ আবার অনেকে রুপোর টাকা, লক্ষ্মী-গণেশ মূর্তিও কিনেছেন।
অনেকে ভিড় জমিয়েছেন কাঁসা-পিতলের দোকানে। বছর পঞ্চাশের সোনালি ঘোষের কথায়, ‘‘পুজোর জন্য কিছু পিতলের বাসন কিনে নিলাম। আবার তিন হাজার টাকার কেনাকাটা করায় একটা পিতলের গণেশ উপহার পেলাম।’’ শুধু সোনা-রুপো বা পিতল নয়। বৈদ্যুতিক জিনিসের দোকানেও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। মৃগাঙ্ক মণ্ডল এ দিন ফ্রিজ কিনলেন। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ের জন্য একটা এসিও কিনে নিলাম। ছাড়ও পেলাম অনেকটাই।’’
নাতনির সঙ্গে সোনার দোকানে এসেছিলেন বৃদ্ধা মনোরমাদেবী। হেসে বলেন তিনি, ‘‘আমাদের সময় অক্ষয় তৃতীয়া ছিল। এখন জুড়েেছ ধনতেরস। এই কেনা তো এক রকমের স়ঞ্চয়ই।’’