ই-রিকশার ‘রেজিস্ট্রেশন’ কাজ ধীরে, অভিযোগ হুগলিতে

টোটো দৌরাত্ম্য চলছে রোজ, নাজেহাল যাত্রী

কলকাতা হাইকোর্ট টোটোর বদলে ই-রিকশার ‘রেজিস্ট্রেশন’ করার নির্দেশ দিয়েছে। সম্প্রতি সেই সময়সীমা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। হুগলিতে ই-রিকশা ‘রেজিস্ট্রেশনের’ কাজ ধীরগতিতে চলছে বলে অভিযোগও উঠছে বিভিন্ন মহলে।

Advertisement

প্রকাশ পাল

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:০৯
Share:

ছয়লাপ: টোটোতেই ভরা রাস্তা। শ্রীরামপুরে। ফাইল চিত্র

পথে টোটো নিয়ন্ত্রণ করার কথা প্রশাসনের। উল্টে পথেঘাটে টোটোর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। হচ্ছে যানজট। হাজারো প্রশাসনিক প্রতিশ্রুতির পরেও হুগলির বিভিন্ন শহরে টোটোর দৌরাত্ম্যে লাগাম পরানো যায়নি বলে অভিযোগ নিত্যযাত্রীদের। ই-রিকশা কবে পথে নামবে, উঠছে সেই প্রশ্নও।

Advertisement

কলকাতা হাইকোর্ট টোটোর বদলে ই-রিকশার ‘রেজিস্ট্রেশন’ করার নির্দেশ দিয়েছে। সম্প্রতি সেই সময়সীমা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। হুগলিতে ই-রিকশা ‘রেজিস্ট্রেশনের’ কাজ ধীরগতিতে চলছে বলে অভিযোগও উঠছে বিভিন্ন মহলে। সেই অভিযোগ অবশ্য মানেনি জেলা পরিবহণ দফতর। জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা শুভেন্দুশেখর দাস ফোন ধরেননি। তবে জেলা পরিবহণ দফতরের বোর্ডের সদস্য মুজফফর খানের দাবি, ‘‘ই-রিকশা রেজিস্ট্রেশনের কাজ চলছে। আশা করছি, আদালতের নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই শেষ করা যাবে। তার পরে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে টোটো নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে পদক্ষেপ করা হবে। যেমন খুশি ভাবে টোটো চলতে দেওয়া হবে না।’’

বর্তমানে হুগলি শিল্পাঞ্চলের জিটি রোড, স্টেশন চত্বর-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় টোটোর জন্য জট পাকিয়ে যাচ্ছে। যত্রতত্র গজিয়ে উঠেছে টোটো-স্ট্যান্ড। যেখানে-সেখানে গাড়ি থামিয়ে চলছে যাত্রী তোলা-নামানো। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটেক এক কর্তার দাবি, টোটো বেআইনি। তাই এর নিয়ন্ত্রণে তাদের কিছুই করার নেই। ফলে পুলিশ, পরিবহণ দফতর, পুরসভা— টোটোর লাগাম নেই কারও হাতেই। শিল্পাঞ্চলের এক বাস-মালিকের কথায়, ‘‘বাস শিল্প ধুঁকছিল। টোটো এসে যেন কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিল! প্রথম থেকে টোটোর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করলে সবাই বাঁচত। কিন্তু পরিবহণ দফতর বা প্রশাসন তা করেনি।’’

Advertisement

অভিযোগ, শাসকদলের নেতাদের মদতে এক এক জায়গায় এক এক নিয়মে টোটো চলছে। নিজেদের মতো করে ভাড়াও ঠিক করছে টোটো-চালকদের সংগঠনগুলি। বিজেপির ওবিসি মোর্চার রাজ্য সভাপতি স্বপন পাল বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে হাজার হাজার টোটো রাস্তায় চলছে। শাসকদলের মদত ছাড়া এটা সম্ভব নয়। ই-রিকশার রেজিস্ট্রেশনের কাজে গতি না-থাকার পিছনে সরকারি গাফিলতি রয়েছে।’’ শাসকদল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রবীর ঘোষাল বলেন, ‘‘ই-রিকশার রেজিস্ট্রেশনের কাজ যথাসময়েই শেয হবে। তারপরেই টোটো-কেন্দ্রিক সব সমস্যা মেটানো হবে। এ নিয়ে বিরোধীদের দুশ্চিন্তার কারণ নেই।’’

সম্প্রতি হলুদ রং করে এবং নাম্বার-প্লেট বসিয়ে শ্রীরামপুর পুরসভা নিজেদের এলাকার টোটো চিহ্নিত করে। প্রথমে ২৯টি ওয়ার্ডে ৯০০টি টোটো নথিভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছিল পুরসভা। পরে সেই সংখ্যা আরও আড়াইশো বাড়ানো হয়। বাইরের টোটো শহরে যাতে না-ঢোকে, সেই আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এখন রেল স্টেশনের দু’দিকে টোটোর জন্য পা ফেলা দায়!

পুরকর্তাদের দাবি, আজ, শনিবার থেকে এ ব্যাপারে প্রচার করা হবে। ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাইরের টোটো শ্রীরামপুরে ঢোকা বন্ধ করা হবে। ‘ই-রিকশা’ রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারে পরিবহণ দফতরের নির্দেশিকা পেলে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে। বৈদ্যবাটী পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, এখানে প্রায় ছ’শো টোটো চলে। ই-রিকশা করার ব্যাপারে সরকারি কোনও নির্দেশিকা মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন