প্রতীকী চিত্র।
দিনদুপুরে চলছিল অবৈধভাবে পুকুর ভরাট। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সেই কাজ বন্ধ করে দেয়। গত মঙ্গলবার বৈদ্যবাটি পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সানপুকুর এলাকার ওই ঘটনার পর পুলিশের পদক্ষেপে কিছুটা হলেও সাহস পেয়েছেন এলাকার বাসিন্দারায়। আর এরপরই পুর-এলাকার নানা এলাকায় পুকুর ভরাটের অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে।
শহরের বৌবাজার এলাকায় পুরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে রেল লাইনের ধারে আবর্জনা ফেলে একটি পুকুর বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। একই ভাবে ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মালির বাগান এলাকায় দিনের আলোতেই একটি পুকুর ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
বৈদ্যবাটির পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইনের বক্তব্য, কিছু দিন আগে বৌবাজারের একটি পুকুর ভরাটের অভিযোগ পেয়ে তিনি লোক পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু কাউকে দেখা যায়নি। এর পরে সেখানে আর আবর্জনা পড়েনি। আর মালির বাগানের পুকুরটি ভরাট নিয়ে পুরসভায় কোনও অভিযোগ আসেনি। তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
পুরপ্রধানের আশ্বাস, ‘‘পুকুর ভরাট বরদাস্ত করার প্রশ্ন নেই। পুরসভার তরফে যা ব্যবস্থা নেওয়ার, অবশ্যই নেওয়া হবে।’’ তবে, কয়েক মাস আগেই ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাজিপাড়াতেও একটি পুকুর ভরাট করা হয় বলে অভিযোগ।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, শ্রীরামপুর শিল্পাঞ্চলে পুকুর ভরাটের ক্ষেত্রে দুষ্কৃতীরা জড়িত থাকে। যুক্ত থাকেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের একাংশ। জমির দালাল, জমি-মাফিয়া বা দুষ্কৃতীরা শাসক দলের নেতাদের একাংশ মিলেমিশে কাজ করে বলে অভিযোগ। ফলে সাধারণ মানুষ প্রতিবাদের সাহস পান না। পুলিশ-প্রশাসন থেকে ভূমি দফতর— সব জায়গায় জানিয়েও পুকুর বাঁচানো সম্ভব হয় না। কোনও দলই তাঁদের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে জলাশয় ভরাটের যোগ থাকার অভিযোগ মানেন না।
বছর খানেক আগে কোন্নগরে কয়েকটি পুকুর দুষ্কৃতীদের দখলে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় এলাকার লোক প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন। সম্প্রতি উত্তরপাড়া পুরসভার সামনে ধর্না কর্মসূচিতে জলা ভরাটের অভিযোগ তোলে সিপিএম। তবে শ্রীরামপুর-বৈদ্যবাটিতে বিরোধীরা পুকুর ভরাটের আন্দোলনে নেই বললেই চলে।
সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জলাশয় ভরাট বন্ধ করতে পুলিশকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন। মৌখিক অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার বৈদ্যবাটির সানপুকুরে গিয়ে পুকুর ভরাট বন্ধ করে দেয় পুলিশ। তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, চুনোপুঁটিরা ধরা পড়েছে। এর পিছনে রাঘব-বোয়ালেরা জড়িত আছে। পুলিশ দাবি করেছে, নেপথ্যের চাঁইদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
জেলা পুলিশ কর্তাদের আশ্বাস, পুকুর ভরাটের ব্যাপারে মৌখিক অভিযোগ পেলেও ব্যবস্থা হবে। পুরপ্রধানের দাবি, পুকুর ভরাট করে নির্মাণ হলে পুরসভা তার মিউটেশন করবে না।