অবরোধ তুলতে এল পুলিশ।
ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে দফায় দফায় রেল-সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাল জনতা। শনিবার এই ঘটনার জেরে ঘণ্টা দু’য়েক বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে বারাসত-টাকি রোড এবং বারাসত-হাসনাবাদের রেল যোগাযোগ। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পরে বিদ্যুৎ দফতরের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে কর্মীদের মারধর করা হয়। ভাঙচুরও চলে।
এমনিতেই প্রচণ্ড গরম চলছে। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বারাসত ২ ব্লকে রোজা রেখেছেন অনেকেই। এলাকার মানুষের অভিযোগ, এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন দফায় দফায় লোডশেডিংয়ে প্রাণ ওষ্ঠাগত। শুক্রবার বিকেল থেকেও লোডশেডিং ছিল। সারা রাত আলো আসেনি। প্রবল গরমে ঘুম হয়নি কারও।
সকাল থেকে বারাসত ২ ব্লকের গোলাবাড়ি এবং শাসন থানার বেলিয়াঘাটার কাচকল এলাকায় বাঁশ, বেঞ্চি ফেলে, ইট পেতে রাস্তার উপরে বসে পড়েন মহিলা-পুরুষেরা। আটকে যায় বারাসত-টাকি রোডের মধ্যে সমস্ত যোগাযোগ। অবরোধে আটকে পড়েন অফিস যাত্রী, স্কুল-কলেজের শিক্ষক এবং ছাত্র-ছাত্রীরা। কাচকল থেকে রাজারহাটগামী রাস্তাটিও অবরোধ করে জনতা। বেলা ১১টা নাগাদ শাসন থানার পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে।
গোলাবাড়িতে পুলিশ অবরোধ তুলে দেওয়ার পরে চার-পাঁচটি ম্যাটাডরে চেপে সেখানকার বাসিন্দারা এসে কদম্বগাছিতে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে হামলা চালায়। ইট-পাথর ছোড়া হয়। দফতরের নীচের তলায় ভাঙচুর চালানো হয় বলেও অভিযোগ। নষ্ট হয়ে যায় অফিসের কম্পিউটার-সহ নানা সরঞ্জাম। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে শাহনাজ মোল্লা এবং দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে দুই কর্মী-সহ কয়েকজন জখম হন। উত্তর ২৪ পরগনা বিদ্যুৎ দফতরের ডিভিশনার ইঞ্জিনিয়ার মৌপালি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঝড়ের জন্য গাছ উল্টে পড়েই এই বিপত্তি। অভিযোগ থাকতেই পারে, তা বলে এ ভাবে ভাঙচুর করে কর্মীদের মারধর করা ঠিক নয়। এর বিরুদ্ধে আমরা পুলিশে অভিযোগ জানাব।’’
বিদ্যুতের পাশাপাশি পানীয় জলের দাবিতেও বারাসত-হাসনাবাদ শাখার ষন্ডালিয়া স্টেশনে ট্রেন অবরোধ করে জনতা। খড়িবাড়ি-রাজারহাট রোডের উপরে একটি গাড়িকে আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে দেয়। এর ফলে আটকে যায় ট্রেন। রবিউল ইসলাম নামে এক অবরোধকারী বলেন, ‘‘মাটির নীচ দিয়ে পাইপ লাইন করার অনুমতি দিচ্ছে না রেল। এর জন্য পলতা থেকে জল আনা যাচ্ছে না।’’ ঘণ্টা দেড়েক অবরুদ্ধ থাকার পরে শাসন থানার পুলিশ গিয়ে অবরোধ তোলে।