নতুন দু’টি থানা হচ্ছে হুগলি জেলায়। শ্রীরামপুর থানা ভেঙে শেওড়াফুলি এবং চণ্ডীতলা থানার মশাটে আরও একটি নতুন থানা তৈরি হচ্ছে। এ জন্য প্রকল্প তৈরি করে পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
আরও দু’টি থানার প্রয়োজন পড়ল কেন?
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, শ্রীরামপুর মহকুমা শহর। আদালত, জেল-সহ মহকুমার গুরুত্বপূর্ণ বেশিরভাগ দফতরই এই শহরে। প্রতিদিন প্রচুর লোক নানা প্রশাসনিক ও ব্যক্তিগত কাজে এই শহরে আসেন। কলকাতার কাছে হওয়ায় এবং নানা সুযোগ সুবিধা যুক্ত এই শহরে প্রতিদিন জনসংখ্যার চাপ বাড়ছে। ফলে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুষ্কৃতী ও অসামাজিক কাজকর্ম। কিন্তু তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাড়েনি পুলিশের পরিকাঠামো এবং সংখ্যা। ফলে শুধু শ্রীরামপুর থানার পক্ষে এলাকার উপর সার্বিক নজরদারি কঠিন হয়ে পড়ছে। সেই চিন্তা-ভাবনা থেকেই শ্রীরামপুর থানাকে ভেঙে শেওড়াফুলিকে পৃথক একটি থানা করার বিষয়টি প্রশাসনের কর্তাদের মাথায় আসে। তার উপর শেওড়াফুলিতে রয়েছে জেলার সবচেয়ে বড় কাঁচা সব্জির হাট। হাটে প্রতিদিন শ’য়ে শ’য়ে ব্যবসায়ীরা ভিড় করেন। প্রচুর টাকার লেনদেন চলে। সব মিলিয়ে পুলিশি নজরদারি সেখানেও খুব জরুরি। সে কথা মাথায় রেখেই শেওড়াফুলিকে নতুন থানা তৈরির কথা ভাবা হচ্ছে।
পাশাপাশি জেলায় যতগুলি গ্রামীণ থানা রয়েছে তার মধ্যে চণ্ডীতলা অন্যতম বড় থানা। এই থানার নিজস্ব কোনও ফাঁড়িও নেই। ফলে শুধু চণ্ডীতলায় বসে দূরবর্তী এলাকাগুলিতে নজরদারি চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলে পুলিশের মত। এই থানার এক প্রান্তে হরিপাল, অন্যত্র জাঙ্গিপাড়া। আবার একদিকে হাওড়া জেলার সীমানা। ফলে সবদিক বিবেচনা করেই চণ্ডীতলাকে ভেঙে মশাটে আরও একটি থানা তৈরির কথা চলছে।
তবে নতুন দুই থানা নিয়ে পুলিশেরই একাংশে ইতিমধ্যেই যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তা হল থানার পরিকাঠামো। তাদের বক্তব্য, এর আগে রিষড়া এবং গুড়াপকে দুটি নতুন থানা করা হয়। দীর্ঘদিন আগে তৈরি ওই দুই থানার পরিকাঠামোয় ঘাটতি আজও মেটেনি। এখনও দু’টি থানারই নিজস্ব বাড়ি নেই। পাশপাশি, দুর্গাপুর এক্সপ্রেস লাগোয়া জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ থানা ডানকুনি। অথচ তারও নিজস্ব ভবন নেই।
এই অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, জেলায় যে থানাগুলির অবিলম্বে পরিকাঠামো তৈরি করা জরুরি তার ব্যবস্থা না করে ফের দু’টি নতুন থানার পরিকল্পনা কতটা যুক্তিযুক্ত? যদিও এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি পুলিশ কর্তারা।