স্নেহাশিস দাশগুপ্ত।—ফাইল চিত্র।
পোর্ট ট্রাস্টের গোলরক্ষক স্নেহাশিস দাশগুপ্ত ওরফে রাজার মৃত্যুর পর সংবাদমাধ্যমের কাছে সেভ ডেমোক্রেসি ফোরামের প্রতিনিধিদের মন্তব্যের জের গড়াল আদালতে। ওই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ফোরামের বিকাশ ভট্টাচার্য, অশোক গঙ্গোপাধ্যায়, আব্দুল মান্নানদের বিরুদ্ধে আদালতে আইনি পদক্ষেপের আবেদন করলেন ধৃত তৃণমূল নেতা পিন্টু নাগের আইনজীবীরা।
বুধবার পিন্টু নাগের আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় এবং অশোক সেন শ্রীরামপুর আদালতের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম রোহিনী রাইয়ের এজলাসে ওই আবেদন করেন। তাঁদের বক্তব্য, গত ৮ অক্টোবর বিকাশবাবুরা শ্রীরামপুরের তারাপুকুর কোয়ার্টারে রাজার বাড়িতে গিয়ে তাঁর বাবা-মা এবং অন্য পরিজনদের সঙ্গে কথা বলেন। সংবাদমাধ্যমের কাছে অশোকবাবু জানান, আসামিদের ‘কাস্টডি ট্রায়াল’ (জেলে রেখে শুনানি) দাবি করছেন তাঁরা।
আসামি পক্ষের আইনজীবীদের বক্তব্য, তদন্তে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ পেলে তবেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিটের প্রশ্ন। তখন তদন্তকারী অফিসারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত ঠিক করে আসামিকে জেলে রেখে শুনানি হবে কি না। কিন্তু এই মামলাটি এখনও প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। রাজা খুন হয়েছেন, না কি আত্মহত্যা বা দুর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। তদন্তকারী অফিসার আদালতে দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট সংগ্রহ করা যায়নি। ফলে চার্জশিট হবেই, সেটাই নিশ্চিত নয়। প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা এমন মামলায় ‘কাস্টডি ট্রায়াল’ দাবি করার অর্থ তদন্তকে প্রভাবিত করা।
এই যুক্তি দিয়ে আদালতের কাছে জয়দীপবাবুরা আবেদন করেন, অশোকবাবুদের এই মন্তব্য আইনত দণ্ডনীয়। আদালত বিষয়টি বিবেচনা করে তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ করুক।
তাঁদের কথা শোনার পরে বিচারক মামলার সরকারি আইনজীবী অতনু ঘোষের অভিমত জানতে চান। অতনুবাবু কিছুটা সময় চান। আদালত জানায়, আগামী ১৮ তারিখে তাঁর বক্তব্য শোনা হবে।
জয়দীপবাবু বলেন, ‘‘আমার মক্কেল শ্রীরামপুরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তৃণমূল নেতা। রাজনৈতিক দূরভিসন্ধি থেকেই ওঁর বিরুদ্ধে এমন মন্তব্য করা হচ্ছে বলে আমরা মনে করছি।’’
গত ৩০ সেপ্টেম্বর ভোরে শ্রীরামপুর মাল গুদামের কাছে রেললাইন থেকে রাজার মৃতদেহ উদ্ধার করে শেওড়াফুলি জিআরপি থানার পুলিশ। ২ অক্টোবর পিন্টুবাবু-সহ অন্যদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন রাজার বাবা দোলন দাশগুপ্ত। তার ভিত্তিতে খুন ও প্রমাণ লোপের ধারায় মামলা রুজু করে পিন্টুবাবু-সহ চার জনকে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ।