Arambag

গর্তে পড়ে ভাঙছে বাসের পা-দানি

বর্ষা এলেই রাস্তা ভাঙে, এ অভিজ্ঞতা প্রতি বছরের। তাপ্পি মারার কাজও চলে। কোথাও কোথাও পূর্ণাঙ্গ সংস্কারও হয়। কিন্তু কয়েক বছরের মধ্যেই ফের পিচ উঠে বেরিয়ে পড়ে খানাখন্দ। বাড়ে দুর্ভোগ। দুই জেলার গুরুত্বপূর্ণ কিছু রাস্তার হাল-হকিকত আনন্দবাজারে। রাস্তার এই বেহাল দশায় সাধারণ মানুষ এবং গাড়ি-চালকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ, অবরোধ লেগেই রয়েছে। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে বাস-মালিকেরা বাস চালানো বন্ধও রেখেছিলেন কয়েকবার।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

আরামবাগ শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২০ ০০:১২
Share:

চাদুরে আরামবাগ-বর্ধমান রাজ্য সড়কের হাল এমনই। —নিজস্ব চিত্র

পিচ উধাও হয়েছে। খানাখন্দে ভরেছে রাস্তা। বৃষ্টির জল পড়ে কোথাও কোথাও গর্ত ডোবার আকার নিয়েছে। এ ছবি আরামবাগ-বর্ধমান রাজ্য সড়কের হুগলির ৯ কিলোমিটার (আরামবাগ থেকে নৈসরাই) জুড়েই। রাস্তার এই বেহাল দশায় সাধারণ মানুষ এবং গাড়ি-চালকদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ, অবরোধ লেগেই রয়েছে। রাস্তা সংস্কারের দাবিতে বাস-মালিকেরা বাস চালানো বন্ধও রেখেছিলেন কয়েকবার। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির হাল ফেরেনি।

Advertisement

পূর্ত দফতরের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী এবং গাড়ি-চালকদের অভিযোগ, গত এক বছর ধরে রাস্তায় খালি জোড়াতালি দেওয়া হচ্ছে। আমপান এবং গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে রাস্তা আরও ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। গর্তে পড়ে হামেশাই উল্টে যাচ্ছে ট্রাক-ট্রাক্টর। যন্ত্রাংশ ভেঙে ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে নিত্যদিন। নিয়মিত দুর্ঘটনায় পড়ছেন মোটরবাইক আরোহীরা।

আরামবাগ মহকুমা পূর্ত দফতরের সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড় অবশ্য জানিয়েছেন, আরামবাগ থেকে নৈসরাই পর্যন্ত রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ১২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা অনুমোদন হয়ে টেন্ডার হয়ে গিয়েছে। ‘ওয়ার্ক অর্ডার’ পেলেই কাজ শুরু হবে।

Advertisement

আরামবাগ থেকে বর্ধমান মোট ৪২ কিলোমিটার রাস্তা। ওই রাস্তায় হুগলি ছাড়াও হাওড়া, দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, এবং উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির বাস চলে। ঝাড়খণ্ডের বাসও যাতায়াত করে। দিনে শ’চারেক বাস ছাড়াও ট্রাক-সহ বিভিন্ন

যানবাহন চলে।

বর্ধমান-আরামবাগ রুটের বাস-মালিক সংগঠনের সম্পাদক তথা হুগলি জেলা দূরপাল্লার বাস-মালিক সংগঠনের(ইন্টার রিজিয়ন) অন্যতম কর্তা শান্তনু গুপ্তের অভিযোগ, “রাজ্য সরকার রাস্তাটিকে সম্প্রসারণের করে চার লেনের কথা বলছে বছর দুয়েক ধরে। বছর খানেক আগে মুখ্যমন্ত্রী গুড়াপের সভায় আরামবাগ-বর্ধমান রাস্তার নাম করে পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের কথা বলেছিলেন। কোথায় কী?’’ শান্তনুর অভিযোগ, “আরামবাগের পল্লিশ্রী থেকে নৈসরাই পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার দূরপাল্লার বাসে যেতে আগে সময় লাগত ১২-১৫ মিনিট। এখন ৪০ মিনিটের বেশি লাগছে। উপরন্তু যন্ত্রাংশ ভাঙছে। দুর্ঘটনা ঘটছে।

রাস্তায় এমনই গর্ত যে সাবধানে যাওয়া সত্ত্বেও বাসের পা-দানির দু’টি করে ধাপ ভেঙে গিয়েছে।’’

ক্ষুব্ধ অ্যাম্বুল্যান্স-চালকেরাও। মৃণাল শর্মা নামে তাঁদেরই একজন বলেন, “আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল থেকে বর্ধমান মেডিক্যালে আগে রোগী নিয়ে ৩৫ মিনিটে পৌঁছে যেতাম। এখন প্রায় সওয়া এক ঘণ্টা লাগছে। মালবোঝাই ট্রাক বা যাত্রীবোঝাই বাস এমন হেলেদুলে যায় ওভারটেক করতে ভয় লাগে। আমরা ওই ভাঙা অংশ এড়িয়ে অনেকটা ঘুরে তিরোল হয়ে ওই রাস্তার বুলচন্দ্রপুর হয়ে যাতায়াত করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন