বন্ধ: অবরোধের জেরে যানজট হাজিপুর চৌমাথায়। নিজস্ব চিত্র
টানা বৃষ্টির জেরে গোঘাট-১ ব্লকের দলকার জলা সংলগ্ন নকুণ্ডা পঞ্চায়েত এলাকার বেশ কিছু গ্রাম জলে ডুবে রইল।
গোঘাট ও বাঁকুড়ার জল আমোদর এবং তারাজুলি খাল দিয়ে এসে জমছে এই সব এলাকায়। আসলে খাল দু’টি নকুণ্ডায় এসে মজে গিয়েছে। গোঘাট-১ ব্লক এলাকার নকুণ্ডা ও শ্যাওড়া পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা ভেসে গিয়েছে চিরপরিচিত ‘দলকার জলা’য়। স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত যথাযথ সংস্কার হয়নি জলাটি। ফলে প্রতি বছর এই হয়রানি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়দের।
রবিবার সকালেও রাস্তার উপর কোমর সমান জল। ফলে আরামবাগ-নকুণ্ডা রুটের সমস্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কুলিয়া, দেওয়ানচক এবং কোটা গ্রামে বাড়ির উঠোনগুলিতে বাড়ছে জলস্তর। গোঘাট-১-এর বিডিও অসিতবরণ ঘোষ বলেন, “আমরা নজর রাখছি। এখন অবধি কাউকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।” শনিবার গোঘাটের পাণ্ডুগ্রামে রাস্তা ভেসে যাওয়ায় দুপুর থেকে আরামবাগ-বদনগঞ্জ রুটের বাস বন্ধ ছিল। এ দিন জল নেমে ওই রাস্তায় ফের বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তবে এখনও অমরপুর, পশ্চিমপাড়া, বদনগঞ্জ এলাকায় জল নামেনি।
এ দিন বৃষ্টির জোর কমায় মহকুমার পুরশুড়া, গোঘাট-২ এবং খানাকুলের দু’টি ব্লক এলাকা খানিকটা স্বস্তিতে। তবে আরামবাগ ব্লকের সালেপুর-২ পঞ্চায়েত এলাকায় দ্বারকেশ্বর নদীবাঁধের ভিতরে বসবাস করা বেড়াবেড়ে এবং ডহরকুণ্ডু গ্রামের মোট চারটি পাড়ার ৮৯টি পরিবারকে নিয়ে চিন্তায় রয়েছে ব্লক প্রশাসন।
সদ্য সংস্কার করা রাজ্য সড়কের ধারে নিকাশি নালা তৈরি হয়নি। আর সেই কারণে জলে ভাসছে এলাকা-এমনই অভিযোগ তুলে রবিবার সকালে গোঘাটের হাজিপুর চৌমাথার মোড়ে পথ অবরোধ করলেন স্থানীয়রা। নিকাশি নালার দাবিতে সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত চলে অবরোধ। পূর্ত দফতর নালা তৈরির আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে।
দু’দিন ধরে টানা বৃষ্টিতে জলে ডুবে রয়েছে পান্ডুয়ারও বেশ কয়েকটি এলাকা। বেহাল নিকাশির জন্য জল বেরোতে সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ খারাজিপাড়া, সাতঘড়িয়া, পাঁচগড়া, আনন্দনগর, কুলিপুকুর-সহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের। সমস্যার কথা স্বীকার করে পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান অভিজিৎ রায় বলেন, ‘‘এলাকার সদস্যরাই অস্থায়ী ভাবে নালা কেটে বৃষ্টির জল বের করছেন।’’ পান্ডুয়ার বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বৃষ্টির জন্য যাতে মানুষের কোনও অসুবিধা না হয় তাই কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ব্লকের ১৬টি পঞ্চায়েতে প্রায় এক হাজার ত্রিপল পাঠানো হয়েছে।’’