মাথার উপরে পাকা ছাদ নেই। দু’বেলা দু’মুঠো খাওয়ার জন্য রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতে হয়েছে। এই প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে এ বার আন্তর্জাতিক কিক বক্সিংয়ে পদক জিতলেন বৈদ্যবাটির ঝুপড়িবাসী সমীর দাস। তাঁর ঝুলিতে এসেছে দু’টি পদক। গত ১১-১৪ ডিসেম্বর দ্বিতীয় বিশ্ব মার্শাল আর্ট গেমসের আসর বসেছিল দিল্লির জামিয়া-মিলিয়া ইসলামিয়া কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্পোর্টস কমপ্লেক্সে। ভারত ছাড়াও ইতালি, লন্ডন, ইরান, মঙ্গোলিয়া-সহ আরও কয়েকটি দেশ যোগ দিয়েছিল। কিক বক্সিংয়ে দেশের ৭২ জন প্রতিযোগী যোগ দিয়েছিলেন। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ১৬ জন ছিলেন। ৪টি সোনা ও ২টি রুপো-সহ ১৪টি পদক জেতেন তাঁরা। সব ক’টি স্বর্ণপদকই পান উত্তরবঙ্গের কিক-বক্সাররা। সমীর মিউজিক্যাল ইভেন্টে রুপো এবং ফাইটিংয়ে ব্রোঞ্জ জেতেন। নিজেদের বিভাগে ফাইটিংয়ে হুগলির রোহন চৌধুরী রুপো, সায়নজিৎ দাস ও অভিজিৎ বিশ্বাস ব্রোঞ্জ পদক জেতেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের খেলোয়াড়রা ২টি ব্রোঞ্জ জেতেন।
তবে পদক জেতার নিরিখে সার্বিক ভাবে চ্যাম্পিয়ন হয় ইরান। ৩৫টি সোনা, ১৭টি রুপো-সহ ইরান পেয়েছে ৬৮টি পদক। পরের স্থানেই রয়েছে ভারত। ভারতের ঝুলিতে আছে ৬১টি পদক। তার মধ্যে ১৯টি সোনা ও ১৭টি রুপো। ভারতের কোচ তথা প্রতিযোগিতার অন্যতম কর্তা রিপণচন্দ্র শীল বলেন, ‘‘এ রাজ্যের ছেলেরা ভাল ফল করেছে। হুগলির চার জনই পদক পেয়েছে।’’ জাতীয় স্তরে ভাল ফল করায় বিশ্ব মার্শাল আর্ট গেমসে সুযোগ পান বৈদ্যবাটি স্টেশন লাগোয়া ঝুপড়িবাসী সমীর দাস। টাকার অভাবে এই প্রতিযোগিতায় যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল তাঁর। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই তাঁকে সাহায্য করেন। রিপনবাবু অনেক দৌড়ঝাঁপ করেন। সমীরের কথায়, ‘‘সকলে পাশে না দাঁড়ালে যেতে পারতাম না।’’