সায়রের মৃত্যু, দাবি সিআইডি তদন্তের

রিষড়ার বাসিন্দা সায়র করের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে সিআইডি তদন্তের দাবি জানাল তাঁর পরিবার। শ্রীরামপুরের মাহেশের বাসিন্দা সায়রের দেহ ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে রিষড়া স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে মালগুদামের কাছে রেল লাইনের ধারে উদ্ধার হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৭ ০১:০৫
Share:

রিষড়ার বাসিন্দা সায়র করের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনে সিআইডি তদন্তের দাবি জানাল তাঁর পরিবার।

Advertisement

শ্রীরামপুরের মাহেশের বাসিন্দা সায়রের দেহ ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে রিষড়া স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে মালগুদামের কাছে রেল লাইনের ধারে উদ্ধার হয়। সেদিন সায়রের জন্মদিন ছিল। ২৫ ফেব্রুয়ারি ছেলের দুই বন্ধুর বিরুদ্ধে শেওড়াফুলি জিআরপি-তে এফআইআর করেন সায়রের বাবা রত‌ন কর। কিন্তু মঙ্গলবার পর্যন্ত মামলার তেমন অগ্রগতি হয়নি। বস্তুত ঘটনার পাঁচ দিন পরেও অন্ধকারে হাতড়াচ্ছে রেল পুলিশ।

মঙ্গলবার রতনবাবু বলেন, ‘‘এতগুলো দিন পেরিয়ে গেল। অপরাধীরা হয়তো তথ্যপ্রমাণ লুকিয়ে ফেলছে। আমাদের মনে হচ্ছে, যে কোনও কারণেই হোক রেল পুলিশ যথাযথ তদন্ত করতে পারছে না। তাই সিআইডি তদন্ত চেয়েছি।’’ এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েক হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

সায়রের পরিবার সূত্রে খবর, ২৩ ফেব্রুয়ারি সকালে তাঁদের বাড়িতে হাজির হন সায়রের বন্ধু সালকিয়ার বাসিন্দা সুরজিৎ বণিক। সায়রকে ঘুম থেকে তুলে ‘জন্মদিনের শুভেচ্ছা’ জানান তিনি। দুপুর পর্যন্ত সায়রের সঙ্গেই ছি‌লেন। সায়রের বাড়িতেই দুপুরের খাওয়া সারেন। তার পরে বেলা ৩টে নাগাদ সুরজিতের স্কুটিতে চেপে সায়র বেরিয়ে যান দমদম ক্যান্টনমেন্টে বিশাল বৈঠা বলে এক বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে। বিশাল এবং ওই এলাকার এক তরুণীও সায়রকে ফোন করেছিলেন বলে তাঁর আত্মীয়েরা জানান। ওই রাতেই সায়রের দেহ উদ্ধার হয়।

ঘটনার পর থেকে সুরজিতের আচরণ সন্দেহজনক ঠেকে সায়রের বাড়ির লোকজনের কাছে। সায়রের বাড়ির লোকজন জানান, সুরজিৎ তাঁদের জানান ওইদিন দুপুরে বালিঘাটে সায়রকে নামিয়ে তিনি স্কুটি নিয়ে বাড়ি ফিরে যান। যদিও সায়রের মৃত্যুর পর তাঁর বাড়িতে এক বারের জন্যও আসেননি সুরজিৎ। সায়রের পরিবারের অভিযোগ, সুরজিৎ এবং তাঁর পরিজনেরা তাঁদের এড়িয়ে যাচ্ছেন।

সোমবার জিআরপি থানায় সুরজিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারী অফিসাররা। রেল পুলিশ সূত্রে দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে তারা জেনেছে, ট্রেন থেকে ঝাঁপিয়ে সায়র আত্মঘাতী হয়েছেন। মঙ্গলবার শ্যাম কর্মকার নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী শ্রীরামপুর আদালতে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দি দেন।

এফআইআর হওয়ার পরে তিন দিন কেটে গেলেও কাউকে ধরা গে‌ল‌ না কেন?

তদন্তকারীদের দাবি, জেরা করেও ঘটনার ব্যাপারে অভিযুক্তদের জড়িত থাকার প্রমাণ মেলেনি। তাই কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। রেল পুলিশের এক অফিসার বলেন, ‘‘ট্রেন থেকে ফেলে দিলে দেহে যেমন আঘাত থাকে, এ ক্ষেত্রে তা ছিল না। তবে এ নিয়ে নির্দিষ্ট ভাবে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়। সব সম্ভাবনার কথাই মাথায় রাখা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া সায়রের মোবাইল‌ের কল রেকর্ড ঘেঁটে দেখা হচ্ছে। সেদিন তিনি যাঁদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন