কল্যাণের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হুমকির অভিযোগ বিজেপি নেত্রীর

তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঢুকে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুললেন হুগলি জেলা বিজেপি-র সভানেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্য। তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’-এর প্রতিবাদে শুক্রবার এক দলীয় কর্মসূচিতে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ তোলেন কৃষ্ণাদেবী। অভিযোগ ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪০
Share:

মহকুমাশাসকের দফতরের বাইরে অবস্থান বিজেপি-র। ছবি: প্রকাশ পাল।

তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় ঢুকে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুললেন হুগলি জেলা বিজেপি-র সভানেত্রী কৃষ্ণা ভট্টাচার্য। তৃণমূলের ‘সন্ত্রাস’-এর প্রতিবাদে শুক্রবার এক দলীয় কর্মসূচিতে শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ওই অভিযোগ তোলেন কৃষ্ণাদেবী। অভিযোগ ‘হাস্যকর’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

শ্রীরামপুর পুর-এলাকায় শাসক দলের ‘সন্ত্রাস’-এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার পুলিশের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিল সিপিএম। একই অভিযোগে শুক্রবার বিক্ষোভ-অবস্থান কর্মসূচি নেয় বিজেপি। বেলা ১২টা নাগাদ মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। শ্রীরামপুরের বেশ কয়েক জন বিজেপি প্রার্থীও তাতে সামিল হন। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের কাছে কল্যাণবাবুর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন কৃষ্ণাদেবী। তাঁর অভিযোগ, ‘‘আমাদের প্রার্থীরা নির্বিঘ্নে, নিশ্চিন্তে ঘুরতে পারছেন না। যে সব ওয়ার্ডে আমাদের জেতার সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে গুন্ডা নিয়ে ঢুকে ধমকাচ্ছেন-চমকাচ্ছেন। জামা তুলে কোমরে পিস্তল দেখাচ্ছেন।’’ জেলা জুড়ে প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র ঢুকেছে দাবি করে কৃষ্ণাদেবী প্রশাসনকে তা বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানান। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্নও তোলেন। কৃষ্ণাদেবী ছাড়াও অবস্থানে সামিল হন দলের সহ-সভাপতি স্বপন পাল, শ্রীরামপুর মণ্ডলের সভাপতি নির্মল সরকার প্রমুখ।

তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে কল্যাণবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি পারলে দেখে আমার কোমর থেকে পিস্তল নিয়ে যান। আসলে ওঁরা নিজের মতো করে সবাইকে ভাবেন। শিক্ষাদীক্ষার যে স্তর, তাতে এর বাইরে ভাবতেও পারেন না। ওদের সঙ্গে লোকজন একেবারেই নেই। তাই সন্ত্রাসের গল্প করছে।’’

Advertisement

এ দিন মহকুমাশাসক মৃণালকান্তি হালদারের সঙ্গেও দেখা করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে নালিশ জানান বিজেপি নেতারা। মহকুমাশাসক জানান, বিজেপি-র অভিযোগ নিয়ে আইনমাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মহকুমাশাসকের ঘরে ঢোকার আগে বেশি লোক যাওয়া নিয়ে সেখানে নিযুক্ত দুই পুলিশকর্মীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয় আন্দোলনকারীদের। তাঁদের অভিযোগ, ওই দুই পুলিশকর্মী তাঁদের কটাক্ষ করেন। স্বপনবাবুই কর্মী-সমর্থকদের বুঝিয়ে শান্ত করেন।

গত লোকসভা ভোটের নিরিখে শ্রীরামপুর পুর-এলাকার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। সেই হিসেব মাথায় রেখেই বিজেপি কিছুটা উৎসাহিত। এ বার এখানকার প্রায় সবক’টি ওয়ার্ডেই প্রার্থী দিয়েছে তারা। কিন্তু অন্তত নয়-দশটি ওয়ার্ডে তৃণমূল তাদের প্রচারে বাধা দিচ্ছে বলে বিজেপি-র অভিযোগ।

স্বপনবাবু বলেন, ‘‘বিভিন্ন জায়গায় আমাদের প্রার্থীকে মারধর করা হয়েছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অথচ পুলিশ-প্রশাসন জেগে ঘুমোচ্ছে।’’

তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য বিরোধীদের এ সব অভিযোগ ধর্তব্যেই আনছেন না। জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সুবীর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘প্রচারে বিরোধী দলগুলি আমাদের তুলনায় অনেক পিছনে। দাদা (কল্যাণবাবু) নিজে প্রার্থীদের হয়ে মানুষের দরজায় দরজায় যাচ্ছেন। তাতেই বিরোধীরা দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন