হুগলি জেলার স্কুলগুলিতে মিড-ডে মিল প্রকল্পে খাবারের মান যথাযথ থাকছে কিনা, তা পরীক্ষার জন্য প্রতি মাসে নমুনা পরীক্ষাগারে পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে গত বছর মে মাস থেকে। এ বার প্রকল্পে হিসেবের গরমিল ঠেকাতে প্রতিদিন যাবতীয় তথ্য এসএমএস করে স্কুলগুলিকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই মতো আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হচ্ছে হুগলিতে। এ জন্য থাকছে শিক্ষা দফতরের একটি টোল ফ্রি নম্বর (১৫৫৪৪)।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই সব ক’টি ব্লক প্রশাসন এবং পুরসভায় এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। স্কুলগুলিকে জানাতে হবে কত জনকে মিড ডে মিল দেওয়া হল এবং কত জনকে দেওয়া হল না, সে সংক্রান্ত সব কারণ। প্রতিদিনের সেই সব তথ্য মিড-ডে মিলের নতুন পোর্টালে ‘আপলোড’ করা হবে। প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত হুগলির অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) বাণীপ্রসাদ দাস বলেন, “প্রকল্পে স্বচ্ছতা বজায় রাখতেই এই পদ্ধতি চালু হচ্ছে।”
হুগলিতে মোট ৪,১৯১টি স্কুলে মিড-ডে মিল চলে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের মাথাপিছু বরাদ্দ ৪ টাকা ১৩ পয়সা। আর হাইস্কুলগুলির ক্ষেত্রে ৬ টাকা ১৮ পয়সা। অপ্রতুল বরাদ্দের অজুহাত দিয়ে অনেক স্কুল মিড-ডে মিলের উপভোক্তা হিসাবে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেশি দেখিয়ে প্রকল্পটি চালাচ্ছেন বলে বিভিন্ন স্তরে অভিযোগ আসছিল বলে জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন।
তবে, নতুন এই পদ্ধতিতে খুশি নয় অনেক স্কুলই। এতে প্রকল্পটি চালানো যাবে কিনা, তা নিয়েই সংশয় রয়েছে। গোঘাট, তারকেশ্বর, আরামবাগ, সিঙ্গুর, হরিপাল-সহ বিভিন্ন ব্লকের বেশ কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ, একদিকে বরাদ্দ কম। অন্যদিকে ছাত্রছাত্রীদের পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানোর দায়। সব মিলিয়ে সঙ্কট রয়েছেই। এতদিন খাবারের গুণগত মান বজায় রাখতে গিয়েই নির্দিষ্ট উপভোক্তার চেয়ে বেনামে অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন উপভোক্তা বেশি দেখিয়ে সামলানো হচ্ছিল। তার পরেও প্রতি তিন মাস অন্তর ১৮০০ থেকে ২০০০ টাকা অব্দি ঘাটতি থেকে যাচ্ছে। এ বার প্রতিদিনের নজরদারির জেরে প্রকল্প কি আদৌ চালানো যাবে!