শিক্ষাবর্ষের সাত মাসেও বই পৌঁছয়নি

মাদ্রাসায় পাঠক্রম শেষ করা নিয়ে সংশয়ে শিক্ষকেরা

শিক্ষাবর্ষের প্রায় সাত মাস পেরিয়ে গিয়েছে। অথচ এখনও পাঠ্যবই পৌঁছয়নি হাওড়া জেলার অনেক মাদ্রাসায়। ফলে সমস্যায় পড়েছে ছাত্রছাত্রীরা।অনেক মাদ্রাসাতেই দ্বিতীয় ইউনিট টেস্টের সময় হয়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে পাঠ্য পুস্তক ছাড়াই পরীক্ষায় বসতে হতে পারে ভেবে চিন্তায় ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা।

Advertisement

মনিরুল ইসলাম

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৬ ০২:০১
Share:

শিক্ষাবর্ষের প্রায় সাত মাস পেরিয়ে গিয়েছে। অথচ এখনও পাঠ্যবই পৌঁছয়নি হাওড়া জেলার অনেক মাদ্রাসায়। ফলে সমস্যায় পড়েছে ছাত্রছাত্রীরা।

Advertisement

অনেক মাদ্রাসাতেই দ্বিতীয় ইউনিট টেস্টের সময় হয়ে গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে পাঠ্য পুস্তক ছাড়াই পরীক্ষায় বসতে হতে পারে ভেবে চিন্তায় ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা। চলতি বছরে হাওড়ার বিভিন্ন সরকারি মাদ্রাসায় নির্দিষ্ট সময়ের প্রায় মাস খানেক পরে পাঠ্যপুস্তক পাঠানো হয়েছে। দে‌খা গিয়েছে, তাতেও অনেক মাদ্রাসা সব পাঠ্যপুস্তক পায়নি। বিভিন্ন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, সমস্যার কথা বার বার প্রশাসনকে জানানো হলেও কাজ হয়নি।

হাওড়া জেলা সংখ্যালঘু দফতরের আধিকারিক অশোক পাইক চৌধুরীকে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তাঁর উত্তর, ‘‘ওই সব মাদ্রাসার শিক্ষকদের বলুন আপনাদের সঙ্গে না যোগাযোগ করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।’’ বিভিন্ন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বার বার তাঁদের দফতরে যোগাযোগ করেছেন বলা হলেও তিনি তা অস্বীকার করেন।

Advertisement

জেলায় মাদ্রাসার পাঠ্যপুস্তক সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে জেলা সংখ্যালঘু দফতর। কারণ মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর তাদের কাছেই বই পাঠায়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, পাঠ্যপুস্তকের জন্য সংখ্যালঘু দফতরে গেলে বলা হচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষা দফতর থেকে এখনও বই আসেনি। তারা বই পাঠালে তা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হবে। মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলা হচ্ছে, জেলা সংখ্যলঘু দফতরের সঙ্গে কথা বলতে।

শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, আগে প্রতি বছর মাদ্রাসা বোর্ডই বই দিত। এ বছর থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরকে। রদলবদল সংক্রান্ত প্রশাসনিক কাজের ফলেই এই দেরি হয়েছে। তার উপর সরস্বতী প্রেস সময়ে বইয়ের জোগান দেয়নি। এ সবের জন্যই ছাত্রছাত্রীদের বই পেতে সমস্যা হয়েছে।

বাগনানের গুলবাঁধ হাই মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণি ও অষ্টম শ্রেণির বাংলা পাঠ্য পুস্তক শিক্ষাবর্ষ শুরুর সাত মাস কেটে গেলেও এখনও পৌঁছয়নি। আবার খাজনাবাহালা হাই মাদ্রাসায় দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা অঙ্ক বই পেয়েছে চলতি মাসের গোড়ায়। ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, ৬ মাস পরে বই পাওয়ায় তাদের পড়াশোনার অনেক ক্ষতি হয়েছে। একই বক্তব্য শিক্ষকদেরও। গত এপ্রিল মাসে একটি ইউনিট টেস্ট হয়ে গিয়েছে। আবার সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় ইউনিট টেস্ট হবে। কিন্তু এখনও ওই মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদের হাতে সব পাঠ্যবই না আসায় সমস্যায় পড়েছেন কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রছাত্রীরা।

কী ভাবে চলছে পড়াশোনা?

বিভিন্ন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বাধ্য হয়ে অন্য মাদ্রাসা থেকে বই চেয়ে সেগুলো জেরক্স করে নিতে বলা হয়েছে ছাত্রছাত্রীদের। তবে সব ক্ষেত্রে তাও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বহু ছাত্রছাত্রী প্রথম ইউনিটের পরীক্ষায় খুবই খারাপ ফল করেছে।

বাগনানের খাজনাবাহালা হাই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘বইয়ের অভাবে পঠনপাঠনে অসুবিধা তো হয়েছেই। সবে মাত্র বই দেওয়া হলেও সমস্যা থেকেই গিয়েছে। মাস ছয়েক পরেই মাধ্যমিক। কী ভাবে পাঠ্যক্রম শেষ করা হবে সেটাই চিন্তার বিষয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন