নির্বাচনের প্রস্তুতি বৈঠকে চড়াও হয়ে এক বিজেপি নেতাকে মারধর করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে পুরশুড়াক শ্যামপুর গ্রামের ঘটনা। উমেশ রায় নামে এক বিজেপি নেতাকে গুরুতর জখম অবস্থায় আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। উমেশের অভিযোগ, তৃণমূলের লোকজন বাঁশ দিয়ে মেরে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে। যদিও বুধবার বিকেল পর্যন্ত থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিজেপির দাবি, রাত ৮টা নাগাদ এক দলীয় সমর্থকের বাড়িতে বুথ কমিটির বৈঠক চলছিল। সে সময় তৃণমূলের লোকজন হামলা চালায়। উমেশ বলেন, ‘‘তৃণমূলের ব্লক যুব সভাপতি খোকন মল্লিকের নেতৃত্বে অভিজিৎ বেরা, কালিপদ কারক-সহ কয়েকজন বাঁশ-লাঠি নিয়ে জোর করে ঢুকে হামলা করে। ‘বিজেপি করা ঘুচিয়ে দেব’ বলেই মাথায় বাঁশ মারে।’’ এলাকার বাসিন্দারা উমেশকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। অভিযুক্ত তৃণমূল যুব সভাপতি খোকন মল্লিক অবশ্য বলেন, “মিথ্যা আমাকে জড়িয়েছে। গ্রাম্য ঝগড়া থেকেই গোলমাল হয়ে থাকতে পারে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত তিন দিন ধরেই পুরশুড়ার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীদের উপর তৃণমূলের হামলার অভিযোগ উঠছে। সোমবার রাতেও স্থানীয় সোদপুরে সুজিতকুমার মণ্ডল নামে আর এক বিজেপি অঞ্চল কর্মকর্তার বাড়ির হামলার অভিযোগ উঠেছে। সুজিতের দাবি, বাড়ির তালা ভেঙে ঢুকে একদল দুষ্কৃতী তাঁর মোটরবাইক ও অন্য আসবাব ভাঙচুর করে। তারপর তাঁকে মারধর করা হয়ে। মঙ্গলবার সকালে আবার সোদপুরে বাজার করতে গেলে মসিনানের বিজেপি নেতা গৌরহরি চক্রবর্তীকে রাস্তায় ফেলে পেটানোর অভিযোগ ওঠে।
সোদপুরের মারধরের ঘটনা দু’টিতে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তৃণমূলের এক অঞ্চল নেতা-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অমর বেরা এবং সমীরণ ভুল। দু’জনেই সোদপুরের বাসিন্দা। তবে শ্যামপুরে বিজেপি নেতার মাথা ফাটানোর ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুরশুড়ায় দলের নেতাদের উপর টানা এই হামলা নিয়ে পুরশুড়া বিজেপি ব্লক সভাপতি সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্যজুড়ে অবধারিত হার ঠেকাতে তৃণমূল মরিয়া। নির্বাচন ঘোষণার পরও মারধর করা হচ্ছে আমাদের। ওরা যত মারছে এলাকায় বিজেপির সংগঠন ততই বাড়ছে, মজবুত হচ্ছে।”
যদিও তৃণমূলের পুরশুড়া ব্লক আহ্বায়ক শেখ আবু হুরাই বলেন, “বিজেপি এখানে মাটি পাচ্ছে না। ওদের প্রার্থী ঘোষণাও হয়নি। পাড়াগত বিবাদের ঘটনাটিতে রাজনীতির রং চড়িয়ে প্রচারের
আলোয় আসতে চাইছে।”