দল ছেড়ে ভোট নির্দলে, সিঙ্গুরে রক্তহীন দ্বন্দ্ব

উপর তলার নেতারা যে ফরমানই জারি করুক না কেন, তৃণমূলের কোন্দল নিয়ে সিঙ্গুর আছে সিঙ্গুরেই— প্রমাণ করল পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:১০
Share:

গোলমাল রুখতে তৈরি ছিল প্রশাসন। ছবি: দীপঙ্কর দে।

উপর তলার নেতারা যে ফরমানই জারি করুক না কেন, তৃণমূলের কোন্দল নিয়ে সিঙ্গুর আছে সিঙ্গুরেই— প্রমাণ করল পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন।

Advertisement

শুক্রবার কোথাও দলের মনোনীত প্রার্থীকে হারাতে বিজেপি, নির্দল, সিপিএমের সঙ্গে একযোগে ভোট দিলেন তৃণমূল সদস্যদের একাংশ। আবার কোথাও দলের জয়ী সদস্যকে সরিয়ে রেখে নির্দলকে ভোট দিয়ে জিতিয়ে দিলেন সিঙ্গুরের বহু তৃণমূল সদস্য।

অশান্তি এমনই পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এ দিন সন্ধ্যায়ই সিঙ্গুরের ২ নম্বর পঞ্চায়েতের চার সদস্য কালীঘাটে গিয়েছেন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁদের প্রশ্ন দলীয় প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে একজন নির্দল সদস্যকে জিতিয়ে নিয়ে এলেন দলেরই সদস্যরা!

Advertisement

সিঙ্গুরের ২ নম্বর পঞ্চায়েতটি তফসিলি মহিলা সংরক্ষিত। সেখানে প্রধান পদে বিজলি ঘোষের নাম প্রস্তাব করেন তৃণমূল সদস্যরা। কিন্তু বিরোধিতা আসে দলেরই একাংশ সদস্যের ভিতর থেকে। তা নিয়ে বচসা বাধতেই তৃণমূলের একাংশ পঞ্চায়েত ছেড়ে বেরিয়ে যান। তারপর নির্দল প্রার্থী জবা কর্মকারের নাম প্রস্তাব করা হয়। জিতেও যান তিনি। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ২ নম্বর পঞ্চায়েতে যাঁরা দলের প্রস্তাবিত প্রার্থীর বিরোধিতা করেন তাঁরা হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না ঘনিষ্ট বলে পরিচিত।

বেচারামের বিরোধী হিসেবে পরিচিত সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য নিজে দলীয় নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানাবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘দলের একটি গোষ্ঠী দলেরই জয়ী সদস্যকে হারাতে বিজেপি, সিপিএম, নির্দলের সঙ্গে জোট বাঁধল। টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গেল! অসীমা পাত্র, প্রবীর ঘোষাল, তপন দাশগুপ্তরা যে রফা সূত্র বেঁধে দিয়েছিলেন তা কেউ মানল না। লাভটা কী হল? আমি অরূপ বিশ্বাসকে সব জানাব।’’

বেচারামও তোপ দেগেছেন, ‘‘মাস্টারমশাই এখন দলীয় অনুশাসনের কথা বলছেন? তিনি নিজে তো দলের কোনও অনুশাসন মেনে চলেন না।’’

সিঙ্গুরে এই দুই গোষ্ঠীর কোন্দল দীর্ঘদিনের। সে লড়াই থামাতে জেলা নেতৃত্ব কম চেষ্টা করেননি। রাজ্যের তরফে পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসও শেষ পর্যন্ত হাল ছাড়েননি। কিন্তু বাস্তব যে বদলায়নি, তা দেখা গেল শুক্রবার। রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, দলের জয়ী সদস্যরা যে যার নিজের গোষ্ঠী বাঁচাতে স্থানীয় সমীকরণের উপরই ভরসা রেখেছেন। গোটা ঘটনায় দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘সিঙ্গুরে ঠিক কী হয়েছে দল খতিয়ে দেখবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন