দুর্ভোগ: অনিয়মিত ট্রেন, তাই উপচে পড়ছে ভিড়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
সাঁতরাগছি থেকে হাওড়া। দূরত্ব কয়েক কিলোমিটার।
লোকাল ট্রেনে ওই পথ পেরোতে নাজেহাল হচ্ছেন কয়েক লক্ষ যাত্রী। গোটা তিনেক লেভেল ক্রসিং আর যত্রতত্র সিগন্যালে আটকে পড়াই সমস্যার কারণ। যাত্রীদের অভিযোগ, সাঁতরাগাছি পর্যন্ত ট্রেনের গতি ঠিক থাকলেও অসুখ শুরু তার পরে। টিকিয়াপাড়া পেরোতেই তা চরমে ওঠে। হাওড়া থেকে একের পর এক ট্রেন বেরলেও, হাওড়ামুখী ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢোকার অনুমতি পায় না। বার তিনেক থামার পরে ধুঁকতে ধুঁকতে কোনও মতে প্ল্যাটফর্মে ঢোকে ট্রেন।
প্রায়ই রাতে কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে কোন লোকাল ট্রেন ছাড়বে, তার ঠিক থাকে না বলেও অভিযোগ যাত্রীদের। সম্প্রতি রেলের অনুষ্ঠানে এসে এই অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার এস এন অগ্রবাল। রেল কর্তাদের দাবি, লোকাল ট্রেনের ওই দেরির পিছনে রয়েছে একাধিক সমস্যা। তা খোঁজার চেষ্টাও করছেন তাঁরা। রেল সূত্রের খবর, দক্ষিণ-পূর্ব রেলে ট্রেনের সংখ্যা লাইনের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। প্রতিদিন হাওড়া, শালিমার এবং সাঁতরাগাছি থেকে কম করে ১৯০টি লোকাল যাতায়াত করে। শুধু হাওড়া থেকেই চলে ১৬২টি লোকাল ট্রেন।
এক রেল কর্তা জানান, হাওড়া স্টেশনের ১৭-২৩ নম্বর প্ল্যাটফর্ম দক্ষিণ-পূর্ব রেল ব্যবহার করে। ১০ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম খালি থাকলে তবেই পূর্ব রেল ওই প্ল্যাটফর্ম দিয়ে লোকাল ট্রেন চালায়। রাতে কোন প্ল্যাটফর্ম থেকে কোন ট্রেন ছাড়বে, সেই সমস্যার একটা কারণ এই প্ল্যাটফর্ম না পাওয়া, কবুল করেছেন ওই কর্তা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তাদের দাবি, টিকিয়াপাড়া থেকে যে চারটি লাইন হাওড়ায় ট্রেন ঢোকা-বেরোতে ব্যবহৃত হয়, তার সঙ্গে প্ল্যাটফর্মের অবস্থান আড়াআড়ি। ফলে ট্রেন ঢোকার সময়ে একাধিক লাইন পেরোতে হয়। রেলের পরিভাষায় একে ‘সারফেস ক্রসিং’ বলে। এই সময়ে অন্য লাইনে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকে। এটিও একটি সমস্যা, বলছেন কর্তারা। দক্ষিণ পূর্ব রেল সূত্রের খবর, সমস্যা দূর করতে হাওড়া স্টেশন থেকে টিকিয়াপাড়া হয়ে সাঁতরাগাছি পর্যন্ত একটি বিকল্প লাইন চালুর কথা ভাবা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “সাঁতরাগাছি ও শালিমার স্টেশন ঢেলে সাজার কাজ এগিয়েছে। কাজ শেষ হলে হাওড়ার চাপ কমবে।’’