—নিজস্ব চিত্র।
আরামবাগ লিঙ্করোড়।
রাস্তা সংস্কারের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। ওই খুঁটি সরানোকে কেন্দ্র করে পূর্ত দফতর এবং বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির টানাপোড়েনের জেরে ঢিমেতালে চলছে আরামবাগ শহর তথা দক্ষিণবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ লিঙ্করোড সংস্কারের কাজ। শহরের মধ্যে মাত্র ১.২ কিলোমিটার ডবল লেনের ওই সড়কটির সার্বিক সংস্কার শুরু হয়ছিল ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর। ‘লিঙ্করোড’-এর আমূল সংস্কার করছে পূর্ত দফতর (সাধারণ)। কলকাতার সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের অনেকগুলি জেলার যোগাযোগের এই সড়কটির আরামবাগ শহরের মধ্যে ঢুকে থাকা ১.২ কিলোমিটার অংশ ঢালাই হচ্ছে। একইসঙ্গে কাজ ফুটপাত ও নিকাশি নালার কাজ করার কথা। বরাদ্দ হয়েছে ৯ কোটি ৯২ লক্ষ টাকা। রাস্তাটি সম্পূর্ণ করার সময়সীমা ৯ মাস। কিন্তু কাজ শুরুর ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও ফুটপাত এবং নিকাশি নালা নির্মাণের কাজ ফেলে রেখে খালি ডবল লেনের একটা দিক হয়েছে। একই ভাবে অন্য দিকের রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু হলেও ফুটপাত ও নিকাশি নালার কাজ ফেলে রাখা হয়েছে। ফলে রাস্তাটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার আদৌও কবে শেষ হবে তা নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে এলাকায়।
বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, খুঁটি সরানোর খরচ খরচ বহন করতে হবে পূর্ত দফতরকে। পূর্ত দফতরের অভিযোগ, তাদের দফতরের অনুমতি ছাড়াই তাদেরই জায়গায় ওই সব খুঁটি পোঁতা হয়েছে। তাই নিজেদের খরচেই সেই খুঁটি সরাতে হবে বিদ্যুৎ দফতরকে।
দুই দফতরের এই টানাপোড়েনে ভুগছেন এই রাস্তা ব্যবহারকারী মানুষজন। রাস্তা সংস্কার ঢিমেতালে চলছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন, পূর্ত দফতরের (সাধারণ) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড়। তবে তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘বিদ্যুৎ দফতর খুঁটি না সরানোয় ফুটপাত ও ড্রেনের কাজ ফেলে রাখতে হচ্ছে। তারা অন্যায় ভাবে খুঁটি সরানোর খরচ দাবি করছে। অথচ আমাদের জায়গায় খুঁটি পোঁতার সময় কোনও অনুমতি নেননি তারা।’’ আর বিদ্যুৎ বন্টন কোম্পানির আরামবাগ ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়র সঞ্জয় শিকারি বলেন, ‘‘দফতরের নিয়ম অনুযায়ী খুঁটি সরানোর খরচ চাওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরের কাছে। তারা অনুমতির প্রসঙ্গ তুলে টাকা দিতে দিতে রাজি হয়নি। জনসাধারণকে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সব সময় অনুমতি নেওয়া যায় না। বিষয়টা উপর মহলের নজরে আনা হয়েছে।’’ দুই দফতরের সমন্বয়ের অভাবে লিঙ্করোড সংস্কারে জট সৃষ্টির কথা স্বীকার করে আরামবাগ মহকুমাশাসক প্রতুলকুমার বসু বলেন, ‘‘বিষয়টা নিয়ে সম্প্রতি মহকুমা মনিটারিং কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখানে দুই দফতরের স্থানীয় আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষদের বিষয়টা জানিয়ে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে। আশা করছি শীঘ্রই তা হবে।’’