ন্যানো বাঁচাও কমিটির ধৃত কর্মীদের জামিন

পুলিশের জালে ধৃত সিঙ্গুরের ন্যানো বাঁচাও কমিটির দুই কর্মীকে আদালত জামিন দিল। সোমবার ধৃতদের চন্দননগর এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন। আদালত সূত্রের খবর, শুধু ধৃত দেবতনু পলাশ মুখোপাধ্যায় এবং মৃন্ময় মাল নন, ওই কমিটির আরও ১১জনকে এদিন জামিন দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৫ ০১:০৪
Share:

পুলিশের জালে ধৃত সিঙ্গুরের ন্যানো বাঁচাও কমিটির দুই কর্মীকে আদালত জামিন দিল। সোমবার ধৃতদের চন্দননগর এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন। আদালত সূত্রের খবর, শুধু ধৃত দেবতনু পলাশ মুখোপাধ্যায় এবং মৃন্ময় মাল নন, ওই কমিটির আরও ১১জনকে এদিন জামিন দেওয়া হয়।

Advertisement

সিঙ্গুরে শিল্পের দাবিতে আন্দোলনরত কমিটির ওইসব কর্মীকে সাত বছর পর পুলিশ হঠাৎ গ্রেফতার করায় সোরগোল পড়ে যায়। জেলার পুলিশ সুপার প্রবীন ত্রিপাঠী অবশ্য বলেন, ‘‘ওঁদের বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। তাই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ’’ যদিও সাত বছর পর কেন সিঙ্গুরে ন্যানো বাঁচাও কমিটির মোট ১৩ জন কমীর্র বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হল তাঁর কোনও স্পষ্ট উত্তর এদিন জেলার পুলিশ কর্তারা দিতে চাননি। যদিও রাজ্য বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, ‘বিরোধী কন্ঠ রোধ করতেই এই পুলিশি ব্যবস্থা।’

বস্তুত ২০০৬ সালে সিঙ্গুরে কৃষিজমি রক্ষা কমিটির আন্দোলন যখন তুঙ্গে তখন সেখানেই পাল্টা শিল্পের দাবিতে মূলত বাম মনোভাবাপন্ন মানুষজন ন্যানো বাঁচাও কমিটি তৈরি করেন। তৎকালীন বিরোধী নেত্রী সেখানে ১৪দিন অবস্থান বিক্ষোভের করেছিলেন। যদিও তাঁর আগেই বামেরা ওই কারাখানার মূল গেটে অবস্থান করে। তাঁদের দাবি ছিল, সিঙ্গুরে ওই কারাখানা গড়তে হবে। টাটারা এই রাজ্যে গাড়ি তৈরির কারখানা করলে রাজ্যের শিল্প মানচিত্রটাই বদলে যাবে।

Advertisement

বস্তুত ৯৯৭ একরের চৌহদ্দির বাইরে সেখানে এখন একমাত্র হিমাদ্রী ক্যামিক্যাল বাদে পাতে দেওয়ার মত কোনও কারখানাই এখন নেই। উল্টে সার্বিক হতাশার চিহ্ন ইচ্ছুক এবং অনিচ্ছুক চাষিদের মধ্যে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে ৩২টি অনুসারী শিল্প এসেছিল। ওই সমস্ত অনুসারী শিল্প সিঙ্গুরে এসেছিল গুজরাট, মহারাষ্ট্র, গুড়গাও-সহ ভারতের নানা প্রান্ত থেকে। তার ফলে কার্যত ভিন রাজ্যের নানা প্রান্তের শিল্পপতিদের সঙ্গে রাতারাতি এই রাজ্যের একটা যোগসূত্র গড়ে উঠেছিল। তার ফলে অন্য রাজ্যের সঙ্গে আদানপ্রদানে এখানে শিল্প সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল।

কিন্তু বিধি বাম বলেই দাবি করেছেন ন্যানো বাঁচাও কমিটির নেতা উদয়ন দাস। তিনি বলেন,‘‘আমরা সিঙ্গুরে কারখানা হওয়ার জন্য আন্দলোন করেছিলাম। কিন্তু এখনকার ছেলেরাই এখন পূবে খাটতে যাচ্ছে। এটাই আমাদের দস্তুর।’’

বস্তুত রাজ্যের প্রথম গাড়ির তৈরির কারখানা হিন্দুস্থান মোটরস্ এখন বন্ধ। দীর্ঘদিন ধরেই ওই কারখানা ধুঁকছিল। তৎকালীন রাজ্য সরকার চেয়েছিল হিন্দমোটরের পাশাপাশি এই রাজ্যে যদি টাটারা আসে, তাঁদের অনুসারী বেশকিছু শিল্প এই রাজ্যে আসবে।

কিন্তু তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তখন রাজ্য রাজনীতি সরগরম। কার্যত পরিস্থিতির ফাঁদে পড়ে টাটারা এই রাজ্য থেকে গুজরাটের সানন্দে পাড়ি দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন