হাওড়ায় ছাদ ভেঙে মৃত ২ শ্রমিক

একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলে শপিং মল তৈরির জন্য কাজ করার সময়ে ছাদ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল দুই শ্রমিকের। গুরুতর আহত হলেন আরও দু’জন। রবিবার রাত ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মীয়মাণ হাওড়া ময়দান স্টেশনের কাছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৮ ০০:২৫
Share:

ধ্বংসস্তূপ: এখানে ঘটে দুর্ঘটনাটি। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

একটি বন্ধ হয়ে যাওয়া সিনেমা হলে শপিং মল তৈরির জন্য কাজ করার সময়ে ছাদ ভেঙে পড়ে মৃত্যু হল দুই শ্রমিকের। গুরুতর আহত হলেন আরও দু’জন। রবিবার রাত ৯টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর নির্মীয়মাণ হাওড়া ময়দান স্টেশনের কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের নাম মীনারুল শেখ (৩৭) এবং শামিম হোসেন (১৮)। দু’জনেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। আহত রফিকুল শেখ এবং জুলমাত শেখকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদেরও বাড়ি মুর্শিদাবাদে।

Advertisement

পুলিশের সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন আগেই হাওড়া ময়দানের শতাব্দী প্রাচীন এই হলটি বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি হলটি ভেঙে একটি শপিং মল তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে হলটির ছাদ ভাঙার সময়ে সেখানে কাজ করছিলেন ৮-১০ জন শ্রমিক। তিনতলার ছাদ ভাঙছিলেন মুকাদ্দর শেখ নামে এক জন। সোমবার ওই শ্রমিক জানান, তিনি যখন হাতুড়ি দিয়ে ছাদটা ভাঙতে শুরু করেন, তখন হঠাৎ মনে হয় গোটা ছাদটা নড়ে উঠল। তখনই তিনি লাফ দিয়ে পাশের ছাদে চলে যান। সঙ্গেসঙ্গে তাঁর সামনেই ছাদটি হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে।

পুলিশ জানায়, তিনতলার ছাদটি যখন ভেঙে পড়ে তখন দোতলায় কাজ করছিলেন মীনারুল শেখ। পুরো ছাদটি ভেঙে পড়ে তাঁর মাথার উপরে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তিনতলার ছাদ ভেঙে পড়লে তার চাপে দোতলার ছাদও ভেঙে পড়ে। একতলায় তখন কাজ করছিলেন আরও কয়েক জন শ্রমিক। দোতলার ছাদের অংশ তাঁদের উপরে পড়লে সেই ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়েন শামিম হোসেন, রফিকুল শেখ এবং জুলমাত শেখ নামে তিন শ্রমিক। ছাদ ভেঙে পড়ার আওয়াজ পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন র লোকজন। তাঁরাই ধ্বংসস্তূপের তলায় চাপা পড়া তিন জন শ্রমিককে উদ্ধার করে হাওড়া জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। রাতেই ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে উদ্ধার করা হয় মীনারুল শেখের দেহ। হাসপাতালে নিয়ে গেলে শামিম হোসেনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বাকি দুই শ্রমিক আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি।

Advertisement

প্রথমে ঘটনাটি পুলিশের নজরে না এলেও পরে মৃত শ্রমিকদের বাড়ির লোকজন হাওড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করলে তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানায়, কাজ চলার সময়ে শ্রমিকদের হেলমেট ও সেফটি জ্যাকেট পরে ছিলেন না। যে ঠিকাদার সংস্থা কাজটি করছিল, সেই সংস্থার পক্ষ থেকে কোনও সুপারভাইজার কাজের তদারকির জন্য উপস্থিতও ছিলেন না ঘটনাস্থলে। পুলিশ জানিয়েছে, রাতে কী ভাবে কাজ চলছিল এবং কেন শ্রমিকদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই ঠিকাদার সংস্থার মালিক ও কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের ডেকে পাঠিয়েছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন