অগ্রগতি: শেষ পর্যায়ে উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের কাজ। ছবি: সুব্রত জানা
ভবন তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। সব ঠিক থাকলে চলতি বছরের এপ্রিল মাসেই চালু হয়ে যাচ্ছে উলুবেড়িয়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। এ কথা জানিয়েছেন হাওড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস।
তবে, প্রথমে চালু হবে সুপার স্পেশ্যালিটির বহির্বিভাগ। ধীরে ধীরে চালু হবে ৮০০ শয্যার অন্তর্বিভাগ-সহ অন্য বিভাগগুলি। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরেই তৈরি হচ্ছে সুপার স্পেশ্যালিটির ভবন। তা পুরোদমে কাজ শুরু করলে মহকুমা হাসপাতালটির আর আলাদা অস্তিত্ব থাকবে না। ভবনটি সুপার স্পেশ্যালিটির কাজেই ব্যবহার করা হবে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
মহকুমা হাসপাতালটি বর্তমানে ৩৪০ শয্যার। কিন্তু এখানে সব সময়েই রোগীর চাপ থাকে। ফলে, শয্যাসংখ্যার থেকে বেশি রোগী ভর্তি থাকেন হাসপাতালে। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, রাজ্যের মহকুমা হাসপাতালগুলির মধ্যে অন্তর্বিভাগ এবং বহির্বিভাগ মিলিয়ে রোগীর চাপ উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালেই সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের ভর্তির হার এই হাসপাতালে অনেকটাই। কারণ, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার রেলপথ এবং ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক তথা মুম্বই রোড এই হাসপাতালের কাছেই। সে কারণেই রেল ও সড়ক দুর্ঘটনায় যাঁরা আহতদের প্রথমেই আনা হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। দুর্ঘটনাগ্রস্তদের ভর্তির হার পর্যালোচনা করে এক সময়ে এই হাসপাতালে একটি ‘ট্রমা কেয়ার ইউনিট’ খোলার কথা বিবেচনা করা হয়েছিল। তবে, এই হাসপাতালকে সুপার স্পেশ্যালিটি স্তরে উন্নীত করার সিদ্ধান্তের পর সেই ভাবনায় দাঁড়ি পড়ে।
প্রথম পর্যায়ে ক্ষমতায় আসার পরে ২০১২ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালকে সুপার স্পেশ্যালিটি স্তরে উন্নীত করার কথা ঘোষণা করেন। শুধুমাত্র ভবন তৈরির জন্য বরাদ্দ হয় ১০০ কোটি টাকা। বছর দুয়েক আগে মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে পাঁচ তলা ভবন নির্মাণ শুরু হয়। গত বছরের ডিসেম্বরে পূর্ত দফতরের পক্ষ থেকে ভবনটি স্বাস্থ্য দফতরকে হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু সময়ে কাজ শেষ না-হওয়ায় তা সম্ভব হয়নি।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে সেই হস্তান্তর প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়ে যাবে। তারপর ধীরে ধীরে ভবনের একতলায় চালু হবে বহির্বিভাগ। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে যে বহির্বিভাগটি চলছে সেটিকেই তুলে নিয়ে যাওয়া হবে নতুন ভবনে। তার আগে অবশ্য স্বাস্থ্যকর্তারা পরিদর্শনে আসবেন। স্বাস্থ্য ভবনের তত্ত্বাবধানে নতুন ভবনে বসবে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের উপযোগী চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জাম।
হাওডা় গ্রামীণ এলাকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় সুপার স্পেশ্যালিটি নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি।