পকসোয় প্রথম বড় সাজা 

নাবালিকা ধর্ষণে ২০ বছর জেল

উলুবেড়িয়া আদালতে পকসো (প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনে বিচার চালু হয়েছে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৪
Share:

আদালতে সাহেব। নিজস্ব চিত্র

বছর পাঁচেক আগে শ্যামপুরের এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করেছিল পটনার এক যুবক। সেই অপরাধে সোমবার উলুবেড়িয়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক (পকসো ) রূপাঞ্জনা চক্রবর্তী দোষী শেখ সাহেব হোসেন ওরফে শেখ সাহেব আলি নামে বছর চব্বিশের ওই যুবককে ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিলেন। সঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড। একইসঙ্গে তাকে চার লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দেন বিচারক।

Advertisement

উলুবেড়িয়া আদালতে পকসো (প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস) আইনে বিচার চালু হয়েছে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কখনও নাবালিকার পরিবার পিছিয়ে যাওয়ায়, কখনও আবার ভয়ে সাক্ষীরা বিরূপ হয়ে যাওয়ায় ওই আইনে অভিযুক্তেরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছিল। সে দিক থেকে দেখতে গেলে এ দিনের মামলার রায় বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পকসো আইনে বিচার চালু হওয়ার পরে এত বড় মাপের সাজা ঘোষণা এই আদালতে এর আগে হয়নি বলে পুলিশের দাবি।

এই মামলার সরকারি আইনজীবী দেবযানী সেনাপতি চৌধুরী বলেন, ‘‘প্রায় পাঁচ বছর ধরে মামলা চলেছে। অভিযোগকারিণীর পরিবারের পক্ষ থেকে এই মামলায় কোনও শিথিলতা দেখানো হয়নি। তাঁরা দোষীর চরম শাস্তি চেয়েছেন এবং বিচার প্রক্রিয়ায় সব দিক দিয়ে সহায়তা করেছেন। এই রায় ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ প্রবণতা কমাবে বলে আশা করা যায়। সাজাপ্রাপ্তের থেকে পাওয়া ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ নাবালিকার পরিবারের হাতে তুলে দিতে হবে বলে বিচারক

Advertisement

নির্দেশ দিয়েছেন।’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সাজাপ্রাপ্ত সাহেবের বাড়ি পটনা থানার ঢালিসাগর গ্রামে। শ্যামপুরে নাবালিকার বাড়ি যে গ্রামে, সেখানে সাহেবের এক আত্মীয়েরও বাড়ি। সেখানে বেড়াতে এসে ২০১৪ সালের ৭ জুন ৮ বছরের ওই নাবালিকাকে সাহেব চকোলেট খাওয়ানোর লোভ দেখিয়ে স্থানীয় একটি নির্মীয়মাণ বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে ধর্ষণ করে। বাড়ি ফিরে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরের দিন বাবা তাকে নিয়ে যান স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে। চিকিৎসক পরীক্ষা করে জানিয়ে দেন, মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে একই কথা শোনেন তার বাবা। বাড়িতে সাহেবের নাম এবং গোটা ঘটনা জানায় ওই নাবালিকা। সে এটাও বলে, মুখ খুললে তাকে প্রাণে মেরে দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছিল সাহেব।

ঘটনার পর দিনই মেয়েটির বাবা শ্যামপুর থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ওই রাতেই সাহেবকে গ্রেফতার করে পকসো আইনে ধর্ষণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে। সাহেব এতদিন জেল হেফাজতেই ছিল। গত শুক্রবার তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন