পানশালায় ভাঙচুরে গ্রেফতার তৃণমূলের ছাত্রনেতা-সহ ৭

ঘটনার চার দিন পরে পানশালায় ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা তথা হরিপালের বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুমিত সরকার-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত অন্যরা হল অভিজিত মাইতি, সৈকত মৈত্র, যযাতি সিংহরায়, প্রীতম অধিকারী, ঈশান চল এবং অমিত সাহা। সকলেই ওই কলেজের ছাত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হরিপাল শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৪৫
Share:

ঘটনার চার দিন পরে পানশালায় ভাঙচুরের ঘটনায় অভিযুক্ত টিএমসিপি নেতা তথা হরিপালের বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুমিত সরকার-সহ সাত জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত অন্যরা হল অভিজিত মাইতি, সৈকত মৈত্র, যযাতি সিংহরায়, প্রীতম অধিকারী, ঈশান চল এবং অমিত সাহা। সকলেই ওই কলেজের ছাত্র। ঈশান ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি। পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে ওই সাত জনকে ধরা হয়। সোমবার ধৃতদের চন্দননগর আদালতে তোলা হলে বিচারক দেড় হাজার টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁদের শর্তাধীনে জামিন দেন। সুমিতের অবশ্য দাবি তিনি ভাঙচুরে জড়িত নন।

Advertisement

জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতৃত্ব তিন দিন আগেই অভিযুক্ত সুমিতকে শো’কজ করেছে। শো’কজের চিঠিতে স্পষ্টই লেখা হয়েছে, সুমিতের উপস্থিতিতেই ওই পানশালায় ভাঙচুর করা হয় বলে তাঁরা জেনেছেন। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সূত্রের ইঙ্গিত, পুরভোটের আবহে সংগঠন তথা দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে ওই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সংগঠনের জেলা সহ সভাপতি কৌশিক শীল বলেন, ‘‘মঙ্গলবারের মধ্যে চিঠির জবাব দিতে বলা হয়েছে সুমিতকে। চিঠি পেলেই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

বিরোধীদের অভিযোগ, সুমিত ওই কলেজের নিয়মিত ছাত্র। অথচ একই সঙ্গে হরিপালের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করেন। হরিপালের সিপিএম নেতা দুলাল ভৌমিকের অভিযোগ, ‘‘এক জন নিয়মিত ছাত্র কী ভাবে স্কুলে পূর্ণ সময়ের শিক্ষক হতে পারেন? আইনত এটা সম্ভব নয়। কিন্তু তৃণমূলের জমানায় সবই সম্ভব। প্রশাসকরা সবাই চোখ বুজে আছেন!’’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্মলেন্দু অধিকারী বলেন, ‘‘আইনত এটা হওয়ার কথা নয়। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’ বিষয়টি সামনে চলে আসায় টিএমসিপি নেতৃত্ব স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে। এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে কৌশিকবাবু জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন। সুমিতও কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

Advertisement

গত বৃহস্পতিবার দুপুরে হরিপালের গোপীনগরের কাছে হড়া এলাকায় একটি পানশালায় দলবল নিয়ে গিয়ে সুমিত ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ। সেখানে মধুচক্র চলে, এই অভিযোগ তুলে অবাধে পানশালার এসি, ফ্রিজ, টিভি, চেয়ার-টেবিল ভাঙা করা হয়। কর্মীদের মারধর করা হয়। অভিযোগ, পুলিশ সেখানে পৌঁছলেও হামলাকারীদের সামলাতে পারেনি। পরে পানশালাটি বন্ধের দাবিতে হামলাকারীরা রাস্তা অবরোধ করে। পুলিশ হামলাকারীদের সরিয়ে দেয়। ওই দিনই হরিপাল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন পানশালা মালিক শীলা সাহা। কলেজের অনুষ্ঠানে ১০ হাজার টাকা অনুদান না দেওয়াতেই ওই ভাঙচুর হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ। ঘটনায় শাসক দলের ছাত্রনেতাদের ‘দাদাগিরি’ নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন ওঠে।

দলের ভাবমূর্তির কথা চিন্তা করে তৃণমূল নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নেন, অভিযুক্ত ছাত্রনেতার পাশে দল দাঁড়াবে না। এর পরেই রবিবার রাতে হরিপাল থানার ওসি বঙ্কিম বিশ্বাস ওই সাত জনকে গ্রেফতার করেন। শীলাদেবীর দাবি, ‘‘শুধু গ্রেফতার নয়, উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এই ধরনের ঘটনা আর যাতে না ঘটে, তা-ও নিশ্চিত করুক পুলিশ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন