চুঁচুড়া বালিকা বাণীমন্দিরে মিড-ডে মিলে নুন-ভাত কাণ্ডের পর...

মিলে কড়া নজর জেলা প্রশাসনের

প্রশাসন সূত্রের খবর, এই তিন সপ্তাহে জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ছয় বার পরিদর্শনে গিয়েছেন ব্লকের আধিকারিকরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২৩
Share:

ফাইল চিত্র।

গত তিন সপ্তাহেই তফাতটা চোখে পড়ছে। মিড ডে মিল ঠিকঠাক চলছে কি না, তা সরেজমিনে দেখতে হুগলিতে নিয়মিত বিভিন্ন স্কুলে পৌঁছে যাচ্ছেন প্রশাসনের কর্তারা। মাঝেমধ্যে খাবার চেখেও দেখছেন।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রের খবর, এই তিন সপ্তাহে জাঙ্গিপাড়ার রাজবলহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে মোট ছয় বার পরিদর্শনে গিয়েছেন ব্লকের আধিকারিকরা। তাঁদের মধ্যে জয়েন্ট বিডিও, থানার বড়বাবুও রয়েছেন। ওই বিদ্যালয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৪৭২ জন পড়ুয়া রয়েছে। গড়ে দৈনিক ৩৮০ থেকে ৪০০ জন মিড ডে মিল খায়। প্রধান শিক্ষক সুকুমার দে বলেন, ‘‘বরাদ্দ কম। তবে, পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি থাকায় সমস্যা হয় না।’’

আগে অনেক জায়গাতেই স্কুলে নামমাত্র নজরদারি ছিল প্রশাসনের। সম্প্রতি চুঁচুড়া বালিকা বাণীমন্দিরে ছাত্রীদের নুন-ভাত দেওয়ার বিষয় সামনে আসতেই প্রশাসনের অন্দরে শোরগোল পড়ে। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও গত ২১ অগস্ট জেলার এক হাজার স্কুলে পরিদর্শনের কর্মসূচি নেন। তিনি নিজেও বলাগড় ব্লকের একটি স্কুলে পড়ুয়াদের সঙ্গে মিড ডে মিল খান। এক ঝাঁকুনিতেই প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা নড়েচড়ে বসেন।

Advertisement

সিঙ্গুরের পলতাগড় রাধারানি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রতিদিন চারশো ছাত্রছাত্রী খায়। সপ্তাহে তিন দিন ডিম এবং সয়াবিনের তরকারি থাকে। তবে রান্নাঘর বা বাচ্চাদের খাওয়ানোর জায়গার সমস্যা রয়েছে।’’ তিনি বলেন, ‘‘গত দু’সপ্তাহে তিন বার প্রশাসনের লোকেরা সরেজমিনে পরিদর্শন করে গিয়েছেন। এটা ভাল।’’

কয়েকটি স্কুলের খুদে পড়ুয়ারা আবার খাবার নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে। তাদের অভিযোগ, নিরামিষ খেতে রোজ ভাল লাগে না। মাংস না হোক, রোজ ডিম পেলে ভাল হয়। অনেক পড়ুয়া আবার খাবারে স্বাদ না হওয়ার অভিযোগ জানিয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগও অবশ্য ভুরি ভুরি। কয়েকজন জানালেন, পরিমাণমতো খাবার মেলে না। খাবারে স্বাদও নেই। ফলে খাবার খেতেই পারে না খুদেরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি বিদ্যা‌লয়ের শিক্ষকেরা বলছেন, যে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বেশি সেখানে কোনও রকমে মিড ডে মিল চলছে। যেখানে পড়ুয়া কম, সেখানে বিপাকে পড়ছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। কারণ, চাল বাদে পড়ুয়া পিছু পঞ্চম শ্রেণিতে সাকুল্যে ৪ টাকা ৮১ পয়সা এবং তার থেকে উঁচু ক্লাসে জন প্রতি ৬ টাকা ৪৫ পয়সা বরাদ্দ। এই টাকায় পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাবার দেওয়া মুশকিল।

জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সরাসরি প্রশাসনকে সমস্যার কথা জানালে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন