রেশনে পাওয়া আটা ফড়েকে বিক্রি করা হচ্ছে। উলুবেড়িয়া আমতা রোডের ধারে। ছবি: সুব্রত জানা
হাওড়া জুড়ে বেআইনি আটাচক্র রুখতে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। কিন্তু এখনও জেলার বহু জায়গাতেই ওই চক্র সক্রিয়। বৃহস্পতিবারেই মাঝেরআটিতে উলুবেড়িয়া-আমতা রোডের ধারে দেখা গেল, গ্রাহকদের থেকে রেশনের আটা কিনছেন দুই ফড়ে।
গ্রাহকদের অনেকেরই অভিযোগ, রেশন থেকে দু’টাকা কেজি দরে যে আটা দেওয়া হয়, তা এত নিম্ন মানের যে খাওয়া যায় না। তাই তাঁরা ফড়েদের কাছে পাঁচ টাকা কেজি দরে ওই আটা বিক্রি করে দেন বলে জানিয়েছেন। অভিযোগ, ফড়েরা ওই আটা কখনও পশুখাদ্য হিসেবে বিক্রি করছেন, কখনও দিচ্ছেন আটাকলেই। আটাকল থেকে হাতফেরত আটা আবার যাচ্ছে রেশনেই।
গ্রাহকদের অভিযোগ এবং বেআইনি আটাচক্রের কথা জানতে পেরে কিছুদিন আগেই খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক আশ্বাস দিয়েছিলেন, মানুষ যদি একান্ত আটা নিতে না চান, গম দেওয়া হবে। গম দেওয়ার দাবি রয়েছে অনেক গ্রাহকেরও। কিন্তু এখনও হাওড়ার রেশন দোকানগুলি থেকে গম দেওয়া শুরু হয়নি। এ বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশ আসেনি বলে জানিয়েছেন উলুবেড়িয়া মহকুমা খাদ্য নিয়ামক সুজিত মান্ডি। তিনি বলেন, ‘‘রেশনের আটার বেআইনি বিক্রি নিয়ে কিছু অভিযোগ আসছিল। নজরদারি চালিয়ে ইতিমধ্যে ফতেপুরে একটি গুদামে হানা দিয়ে পুলিশ কয়েকশো বস্তা আটা এবং গম আটক করেছে। গ্রেফতার করা হয়েছে গুদাম-মালিককে। আবার যদি এমন ঘটে, ব্যবস্থা নেব।’’
খাদ্য সরবরাহ দফতর সূত্রের খবর, গরিব মানুষদের জন্য এ রাজ্যে ‘খাদ্য সুরক্ষা আইন’ চালু হয়েছে ২০১৫ সালে। প্রথমে ২ টাকা কেজি দরে চাল-গম দেওয়ার কথা হয়। পরে রাজ্য সরকার গম দেওয়ার নীতি থেকে
সরে আসে। বদলে আটা দেওয়া শুরু হয়। সরকার অনুমোদিত আটাকলগুলিই গম ভাঙিয়ে আটা রেশন দোকানে পাঠিয়ে দেয়। ‘অতি গরিব’ পরিবার মাসে ২ টাকা কেজি দরে ২০ কেজি আটা এবং ১৫ কেজি চাল পাওয়ার অধিকারী। ‘মাঝারি গরিব’ শ্রেণির জন্য আটা দেওয়া হয় কার্ডপ্রতি মাসে তিন কেজি করে। এ জন্য দাম দিতে হয় কেজিপ্রতি সাড়ে তিন টাকা করে। হাওড়ায় ওই দুই শ্রেণির মানুষেরই আটার মান নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।