অভিযোগ বিধবাকে গণধর্ষণের, পোলবায় আটক দুই যুবক

থানা এবং বিডিও অফিস থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এক বিধবা মহিলাকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল গ্রামেরই ছয় যুবকের বিরুদ্ধে। রাতভর অত্যাচার চালিয়ে অভিযুক্তরাই তাঁকে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় বলে মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির পোলবায়। বছর তেত্রিশের মহিলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পোলবা শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৪ ০১:১৯
Share:

থানা এবং বিডিও অফিস থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে এক বিধবা মহিলাকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল গ্রামেরই ছয় যুবকের বিরুদ্ধে। রাতভর অত্যাচার চালিয়ে অভিযুক্তরাই তাঁকে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় বলে মহিলা পুলিশকে জানিয়েছেন। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির পোলবায়। বছর তেত্রিশের মহিলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Advertisement

হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তথাগত বসু বলেন,“ঘটনার তদন্ত চলছে। দু’জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।” থানার অদূরে ওই ঘটনায় গ্রামবাসীরা ক্ষুব্ধ। মহিলাদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। গণধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগে এফআইআর-এ নাম থাকা সত্ত্বেও পুলিশ ওই দু’জনকে গ্রেফতার না করে স্রেফ আটক করল কেন, তা নিয়ে নির্যাতিতার পরিজনেরা ক্ষুব্ধ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতা মহিলা পোলবার বরুনানপাড়ার বাসিন্দা। বছর তিনেক আগে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে একাই থাকেন। রবিবার সন্ধ্যায় তিনি পোলবা বাজারে যান। রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ সেখান থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, সোয়াখাল এলাকায় ওই চার যুবক তাঁর পথ আগলে দাঁড়ায়। জোর করে তাঁকে স্থানীয় একটি পরিত্যক্ত বাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে আরও দু’জন যুবক জুটে যায়। তার পরে তারা একে একে ধর্ষণ করে ওই মহিলাকে। অত্যাচারে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভোর ৩টে নাগাদ সাইকেলে চাঁপিয়ে মহিলাকে তাঁর বাড়ির সামনে ফেলে দিয়ে যায় তারা। কোনও মতে ঘরে ঢুকেই তিনি অচৈতন্য হয়ে পড়েন।

সকালে পড়শি এক মহিলা তাঁকে ওই অবস্থায় শুয়ে থাকতে দেখে শুশ্রুষা করেন। তিনি বলেন,“ওর দরজা হাঁট করে খোলা ছিল। ভিতরে গিয়ে দেখি ও মেঝেতে পড়ে আছে। শরীর খারাপ ভেবে জলটল দিই।” দুপুরে ওই মহিলাকে ঘটনার কথা খুলে বলেন নির্যাতিতা। তিনি তখন বিষয়টি অন্যান্যদের জানান। নির্যাতিতার আত্মীয়দেরও বিষয়টি জানানো হয়। এর পরে অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে পোলবা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে পোলবা থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ নির্যাতিতাকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যায়। মহিলার শারীরিক অবস্থা দেখে সেখানে তাঁকে ভর্তি করিয়ে নেওয়া হয়।

Advertisement

তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, ওই এলাকায় স্থানীয় একটি পুকুর নিয়ে শরিকি বিবাদ রয়েছে গ্রামবাসীদের মধ্যে। যে মহিলা অভিযোগ করেছেন, তিনি ওই পুকুরের অন্যতম ভাগিদার। পুরো বিষয়টি নির্দিষ্ট করে তদন্তের পরই পরিস্কার হয়ে যাবে। তবে গ্রামবাসীদের একাংশের অভিযোগ, পুকুর নিয়ে বিবাদের অঙ্গ হিসেবেই ওইসব যুবকদের বিরুদ্ধে অযথাই অভিযোগ আনা হয়েছে। আদৌ কী ঘটেছে তা নিরপেক্ষভ তদন্ত ছাড়া জানা সম্ভব নয়। তবে জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন,“ওই মহিলার মেডিক্যাল রিপোর্ট থেকেই পরিস্কার হয়ে যাবে তাঁর উপর অত্যাচারের বিষয়টি। ওই মহিলাকে সোমবার ভর্তি করা হয়। মেডিক্যাল রির্পোট পাওয়া যায়নি। নির্যাতিতার সঙ্গে তদন্তকারীদের কথা বলাও জরুরি। পুলিশ সবদিক খোলা রেখেই তদন্ত শুরু করেছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন