খুনের নালিেশ হয়রানি, অভিযোগ থানার বিরুদ্ধে

নাতনিকে আলুর বন্ড দিয়েও বাঁচল না মেয়ে

বছর তেইশের মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে শ্বশুরবাড়িতে। অভিযোগ, গায়ের রং, কাজের ধরন, এমনকি সদ্য জন্মানো কন্যা সন্তানকে নিয়ে খোঁটা দেওয়া হত। পণের দাবিতে চলত অত্যাচারও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪৮
Share:

মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে মৃতার পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র

বছর তেইশের মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে শ্বশুরবাড়িতে। অভিযোগ, গায়ের রং, কাজের ধরন, এমনকি সদ্য জন্মানো কন্যা সন্তানকে নিয়ে খোঁটা দেওয়া হত। পণের দাবিতে চলত অত্যাচারও। তাই খুনের অভিযোগ দায়ের করতে চেয়েছিলেন বাবা। কিন্তু সেখানেও হয়রানি। তাই মহকুমাশাসকের দফতরে বিক্ষোভ দেখালেন মৃতার পরিবারের লোকজন।

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুরে আরামবাগ মহকুমাশাসকের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় তালা গ্রামের বাসিন্দারা। সোমবার দুপুরে স্থানীয় ষষ্ঠী ঘোষের মেয়ে তনুশ্রী ঘোষের (২৩) ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় শ্বশুরবাড়ি থেকে। বছর দুয়েক আগে তনুশ্রীর বিয়ে হয়েছিল পাশের গ্রাম মজফ্ফরপুরের বাসিন্দা হেমন্ত ঘোষের সঙ্গে।

ষষ্ঠীবাবুর অভিযোগ, সোমবার বিকেলে মেয়ের মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পরই তিনি আরামবাগ থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন। ‘অভিযোগপত্রের বয়ান ঠিক হয়নি’ জানিয়ে রাত ১২টা পর্যন্ত তাঁকে ঘোরানো। ছ’বার বয়ান বদলানোর পর রাত ১২টার সময় তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয় ‘কাল সকালে আসবেন’।

Advertisement

ষষ্ঠীবাবু বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকালেও থানার কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক ফের বলেন, অভিযোগপত্রে ত্রুটি রয়েছে। তখন উপায় না দেখেই আমরা মহকুমাশাসকের কাছে এসেছি।’’

এ দিন মহকুমাশাসক লক্ষ্মীভব্য তনিরু ছিলেন না। তবে আধঘণ্টার মধ্যে এসডিপিও কৃশানু রায় ও আরামবাগের আইসি শান্তনু মিত্র তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করান। এসডিপিও অবশ্য বলেন, ‘‘থানা হয়রান করেছে এমন কথা সত্য নয়। কিছু সমস্যা ছিল, মিটে গিয়েছে। মৃতার বাবা হেমন্ত-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করছে।’’

তনুশ্রীর পরিবারের দাবি, দু’বছর আগে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয়েছিল তাঁর। ছ’মাসের মধ্যেই তনুশ্রী বাপের বাড়িতে জানান, স্বামীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। প্রতিবাদও করেছিলেন তিনি। তারপরই শুরু হয় অত্যাচার।

ষষ্ঠীবাবু বলেন, ‘‘পাত্রপক্ষের যাবতীয় দাবি মিটিয়েই মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। তারপরও মেয়ের চেহারা, কাজ, নিয়ে খোঁটা দিত ওরা। জুলাই মাসে নাতনি জন্মানোর পর দু’লাখ টাকা চেয়েছিল। নগদ দিতে পারিনি। তবে ২০০ প্যাকেট আলুর বন্ড দিয়েছিলাম। তারপরও

এমন করল!’’

জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে মেয়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে হেমন্তদের বাড়ি গিয়ে তালা দেখেছেন ষষ্ঠীবাবুরা। জেনেছেন, মেয়ের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে গিয়েছে পুলিশ। তারপরই তাঁরা অভিযোগ দায়ের করতে থানায় যান।

পরে থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসক না থাকায় মঙ্গলবারও আরামবাগ হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়নি। মৃতদেহ বর্ধমান হাসপাতালে পাঠানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন