মৃত: রাধাদেবী প্রসাদ। নিজস্ব চিত্র
জ্বরের থাবায় মৃত্যু এ বার শ্রীরামপুরেও।
সোমবার রাতে এই শহরের বাসিন্দা এক মহিলার মৃত্যু হল কলকাতার একটি নার্সিংহোমে। মৃত রাধাদেবী প্রসাদ (৪৮) শ্রীরামপুর পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের নেতাজি সুভাষ অ্যাভেনিউয়ের একটি আবাসনের বাসিন্দা।
রাধাদেবীর ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে, ‘কার্ডিও রেসপিরেটরি ফেলিওর ইন এ কেস অব এনএস ওয়ান পজিটিভ ফিভার অ্যান্ড মাল্টি অরগ্যান ফেলিওর।’ তবে রাধাদেবীর পরিবারের দাবি, তাঁর ডেঙ্গি হয়েছিল।
মহিলার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রাধাদেবীর সুগার এবং থাইরয়েডের সমস্যা ছিল। তবে কিছুদিন ধরেই তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। জ্বরে ওই মহিলার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে গিয়েছিল। প্রথমে তাঁকে স্থানীয় টিনবাজারে এক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার শহরের বেল্টিং বাজারের একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার শ্যামবাজারের নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করা হয়। সোমবার রাতে সেখানেই তিনি মারা যান।
রাধাদেবীর পুত্রবধূ কল্পনা প্রসাদ জানান, জ্বরের সঙ্গে রাধাদেবীর বমি হচ্ছিল। শরীরে ব্যথা ছিল। প্লেটলেট কমে ২৪ হাজারে নেমে গিয়েছিল। রাধাদেবীর পরিজনদের দাবি, তিনি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। রাধাদেবীর মেয়ে সুমন ভারতীয় বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতেই মায়ের মৃত্যু হয়েছে।’’ আত্মীয়েরা জানান, রাধাদেবীর ছোট ছেলে ঋতেশও সম্প্রতি ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। তাঁকে কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। এখনও পুরোপুরি সুস্থ হননি তিনি।
রাধাদেবী যে আবাসনে থাকতেন, তার থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পুরভবন। এলাকাটি বাজার চত্বর। পাশেই শ্রীরামপুর স্টেশন। এমন জায়গায় জ্বরে-মৃত্যুর খবরে স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বিগ্ন। রাধাদেবীর আত্মীয়েরা জানান, রাধাদেবীর মৃত্যুর খবর পেয়ে পুরসভার তরফে ফ্ল্যাটের আশপাশে ব্লিচিং পাউডার, মশার লার্ভা মারার তেল ছেটানো হয়।
স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা জঞ্জাল বিভাগের চেয়ারম্যান ইন-কাউন্সিল গৌরমোহন দে বলেন, ‘‘রাধাদেবীর নানা শারীরিক সমস্যা ছিল। জন্ডিসের উপসর্গও ছিল। তাতেই মৃত্যু হয়েছে।’’ সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘ওই আবাসন বা আশপাশের এলাকা পরিচ্ছন্নই রয়েছে। নিয়মিত সাফাইয়ের পাশাপাশি ডেঙ্গি মোকাবিলায় কর্মসূচি চলছে।’’ জঞ্জাল অপসারণ এবং মশার লার্ভা মারার কর্মসূচি আরও জোরদার করা হবে, বলছেন পুরকর্তারা।