শব্দ-প্রতিবাদীকে ফের মার, নালিশ

ফের শব্দ তাণ্ডবে প্রতিবাদীকে মারধরের অভিযোগ উঠল হুগলিতে। এ বার চন্দননগরের গোন্দলপাড়ার ঘটনা। আক্রান্ত শিবম গুপ্ত গুরুতর জখম অবস্থায় চন্দননগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় জড়িত ক্লাব সদস্যদের বুধবার বিকেল পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দননগর শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৫:১০
Share:

জখম: হাসপাতালে শিবম। নিজস্ব চিত্র

রাত ১১টার পরও তারস্বরে বাজছিল ডিজে-বক্স। ছেলের কথা বলে তা বন্ধ করতে অনুরোধ করেছিলেন এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মা। তাঁকে সমর্থন করে ক্লাব সদস্যদের হাতে মার খেলেন আর এক যুবক।

Advertisement

ফের শব্দ তাণ্ডবে প্রতিবাদীকে মারধরের অভিযোগ উঠল হুগলিতে। এ বার চন্দননগরের গোন্দলপাড়ার ঘটনা। আক্রান্ত শিবম গুপ্ত গুরুতর জখম অবস্থায় চন্দননগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনায় জড়িত ক্লাব সদস্যদের বুধবার বিকেল পর্যন্ত গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোন্দলপাড়ার একটি ক্লাবে সরস্বতী পুজো হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতেও চলছিল ‘উৎসব’। নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষার মধ্যেই বাজছিল গান— ডিজে বক্সে। প্রতিবেশী এক মহিলা ওই ক্লাব সদস্যদের তারস্বরে গান বাজাতে নিষেধ করেন। তিনি জানান, বাড়িতে তার ছেলের উচ্চ মাধ্যমিকের প্রস্তুতি নিতে পারছে না। কিন্তু গান বন্ধ তো দূর, ওই মহিলার সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন ক্লাব সদস্যরা। অভিযোগ, তাঁকে কটূক্তিও করা হয়। সে সময় রাস্তা দিয়েই যাচ্ছিলেন বছর পঁচিশের শিবম গুপ্ত। তিনি মহিলার পাশে দাঁড়ান।

Advertisement

অভিযোগ, শিবম ডিজে বাজানোর প্রতিবাদ করতেই ক্লাব সদস্যরা তাঁর উপর ঝাপিয়ে পড়ে। রাস্তায় ফেলে লাথি, ঘুসি মারতে শুরু করে। শিবমকে রাস্তায় পড়ে যেতে দেখেই চিৎকার শুরু করেন ওই মহিলা। তাতেই আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ক্লাব ছেড়ে পালায় সদস্যরা। পড়ে থাকে বক্সগুলি রাত ১২টা নাগাদ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শিবমকে।

বুধবার সকালে শিবমের পরিবার লিখিত অভিযোগ দায়ের করায় এলাকায় যায় পুলিশ। কিন্তু ততক্ষণে ‘সাফ’ হয়ে গিয়েছে ক্লাব। একটি ডিজে বক্সও পায়নি পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ক্লাবের কারও থেকে খবর পেয়েই বক্স সরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন ব্যবসায়ী। তবে প্রতিমা পড়ে রয়েছে খালি মণ্ডপে। ত্রিসীমানায় দেখা যায়নি কোনও সদস্যকে।

শিবমের দাদা সত্যম বলেন, ‘‘রাতে ভাইকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। পুলিশে খবর দিতে পারিনি। সেই সুযোগেই পালাল ওরা। পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে দেখুক।’’ হাসপাতালে শুয়ে শিবম বলেন, ‘‘খাওয়ার পর রাস্তার কল থেকে জল ভরতে গিয়েছিলাম। দেখি ওই মহিলাকে যা নয় তাই বলে গালগাল দিচ্ছে ক্লাবের ছেলেরা। আমি প্রতিবাদ করি। ওদের গান বাজানো বন্ধ করতে বলি। তাতেই খেপে গিয়ে ওরা প্রায় জনা দশেক ছেলে আমার উপর চড়াও হয়। ওই মহিলা চিৎকার না করলে ওরা আমাকে মেরেই ফেলত।’’

প্রতিবাদী ওই মহিলাও বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরে চলছে মাইকের তাণ্ডব। ছেলের পরীক্ষা। ও রাত জেগে পড়াশোনা করে। বাজে অত জোরে আমরা টিঁকব কী করে! উপায় না দেখেই বলতে গিয়েছিলাম।’’

চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সবদিক খতিয়ে দেখে ক্লাব সদস্যদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন