বাসস্ট্যান্ডের এখনকার চেহারা। —নিজস্ব চিত্র।
বাস ধরার জন্য আর খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে বৃষ্টিতে ভেজা বা রোদে পোড়া নয়। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আমতার বাসযাত্রীরা এ বার বাসস্ট্যান্ডের মাথার উপর পেতে চলেছেন ছাদ, বসার জন্য প্রতীক্ষালয়। থাকছে পানীয় জল এবং শৌচালয়ের সুব্যবস্থা।
এক কথায়, বেহাল আমতা বাসস্ট্যান্ডকে খোলনলচে বদলে উদ্যোগী হয়েছে আমতা-১ পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসন। পরিবহণ দফতর পরিকল্পনা দ্রুত অনুমোদনের আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন হাওড়ার জেলাশাসক শুভাঞ্জন দাস।
প্রশাসনের আশা, নতুন পরিকল্পনা রূপায়িত হলে যাত্রী-দুর্ভোগ কমবে। পরিকল্পনা করা হয়েছে, গোটা বাসস্ট্যান্ডটিকে কংক্রিটে ঢালাই করার। উপরে থাকবে কংক্রিটের ছাদ। থাকবে পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা আলাদা প্রতীক্ষালয় ও শৌচালয়। একটি অফিসঘর। পানীয় জলের ব্যবস্থা। চালক ও খালাসিদের জন্য বিশ্রামাগার। বেশি সংখ্যক বাসের জায়গা সঙ্কুলানের জন্য চ্যানেল করা হবে।
বাসস্ট্যান্ডটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখান থেকে আমতা-উলুবেড়িয়া, আমতা-বাগনান, আমতা-সাঁকরাইল, আমতা-ধর্মতলা সিটিসি বাস, আমতা-এয়ারপোর্ট রুটের বাস ছাড়াও আমতা-মুন্সিরহাট-সহ ৪-৫টি রুটের ট্রেকার-অটো চলে। এলাকার লোকেরা কলকাতা, উলুবেড়িয়া-সহ বিভিন্ন জায়গায় যান। বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকাতেই রয়েছে আমতা-১ ব্লক ও পঞ্চায়েত সমিতির অফিসও। সামান্য দূরে আমতা গ্রামীণ হাসপাতাল, থানা, কলেজ ও আদালত। এ ছাড়া অন্যান্য প্রশাসনিক দফতর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে। ফলে, প্রতিদিন কয়েক হাজার লোকের যাতায়াত রয়েছে এখানে।
“পরিকল্পনা রূপায়ণে ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডটি এমন ভাবে করার পরিকল্পনা হয়েছে,
যাতে আগামী দিনে এখানে মার্কেট কমপ্লেক্স বা অন্য কিছু করা যায়।” গৌতম দত্ত, বিডিও
কিন্তু বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী পরিষেবা নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের অন্ত নেই। বাসস্ট্যান্ডের বেশির ভাগ জায়গা জুড়ে নেই ছাউনি। সিটিসি বাসস্ট্যান্ডটিতে সামান্য ছাউনি থাকলেও তা ভাঙাচোরা। বসার পর্যাপ্ত জায়গাও নেই। ফলে, রোদ-বৃষ্টিতে যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হয়। বাসস্ট্যান্ডে পরিস্রুত পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। একটি মাত্র নলকূপ রয়েছে। তার জলও পানযোগ্য নয় বলে যাত্রীদের অভিযোগ। ফলে, পানীয় জল পেতে নাজেহাল হন যাত্রীরা। বেহাল অবস্থা বাসস্ট্যান্ডের শৌচালয়েরও। সব মিলিয়ে আমতা বাসস্ট্যান্ডের যাত্রী-দুর্ভোগ চরমে।
বিডিও গৌতম দত্ত বলেন, “নতুন পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা খরচ ধরা হয়েছে। বাসস্ট্যান্ডটি এমন ভাবে তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে আগামী দিনে এর উপরে মার্কেট কমপ্লেক্স বা অন্য কিছু করা যায়।” পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শুকদেব মণ্ডল জানান, পুরো টাকাই দেবে রাজ্য পরিবহণ দফতর। পরিকল্পনা ওই দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন হয়ে টাকা হাতে এলেই দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।
তবে, যাত্রীরা এখনই নতুন পরিকল্পনাকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাঁদের মতে, বাসস্ট্যান্ডের উন্নতির জন্য পরিকল্পনার কথা আগেও শোনা গিয়েছে। আগে তা রূপায়িত হোক।