বাড়ির এক চিলতে উঠোনে দাদার সঙ্গে এক চাদরের তলায় গুটিসুটি মেরে ঘুমিয়ে ছিল নবম শ্রেণির পড়ুয়াটি। কপালে দিশি পিস্তল ঠেকিয়ে ঘুমন্ত অবস্থাতেই তাকে খুন করে পালাল দুষ্কৃতীরা। সোমবার গভীর রাতে উত্তরপাড়ার মাখলা নাগপুরিয়া এলাকার বস্তিতে সূরজ রায় (১৫) নামে ওই কিশোরকে খুন করার কারণ এখনও স্পষ্ট নয় পুলিশের কাছে।
তবে, সূরজের দাদা পুলিশকে জানান, দিন কয়েক আগে পাড়ার জনা কয়েক সমবয়সীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। সে সময়ে সূরজ জানিয়েছিল, এক কিশোরীকে জড়িয়ে তাকে কিছু বলেছিল ওই তরুণরা। তার জেরেই ঝগড়া, হাতাহাতি। পড়শিরা জানান, দিন কয়েক পরে ফের গলির মোড়ে সূরজের সঙ্গে ওই ছেলেগুলিকে মারপিট করতে দেখে তাঁরাই ছাড়িয় দিয়েছিলেন দু’পক্ষকে। সেই সময়ে ওই তরুণদের এক জন হুমকি দিয়েছিল।
জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘খুনের কারণ স্পষ্ট নয় এখনও। আমরা সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত করছি।’’ তবে, ওই খুন যে পাকা মাথার কাজ নয়, পুলিশের কাছে তা স্পষ্ট।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাখলার স্থানীয় এক হিন্দি হাইস্কুলের ছাত্র সূরজ প্রতি দিনের মতো দাদা সুজিতের সঙ্গে ঘরের খোলা বারন্দায় ঘুমিয়ে ছিল। শীতের রাতে বস্তি এলাকার আধো অন্ধকারে সূরজের কপালে একনলা ‘মুঙ্গেরি’ রিভলবার ঠেকিয়ে গুলি করে পালায় দুষ্কৃতীরা। ঘুমের মধ্যে তাদের বাডি়র লোকজন প্রাথমিক বিহ্বলতা কাটিয়ে ওঠার আগেই দুষ্কৃতীরা গা-ঢাকা দিয়েছিল অন্ধকারে। রাতেই ঘটনার খবর পেয়ে আসে পুলিশ। যদিও এ দিন রাত পর্যন্ত ওই ঘটনায় কারও হদিস পায়নি পুলিশ। পুলিশ জানায়, প্রাথমিকভাবে ওই মারপিটের ঘটনার প্রত্যক্ষ্যদর্শীদের খুঁজে তাঁদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছে পুলিশ।
নিহতের বাবা শ্যামানন্দন পেশায় গোয়ালা। কিশোর ছেলে হঠাৎ খুন হয়ে যাওয়ার ঘোর কাটিয়ে উঠতে পারেননি তিনি। ফ্যালফ্যাল চোখে তিনি বলছেন, ‘‘আমার তো এখনও মনে হচ্ছে দুঃস্বপ্ন দেখছি!’’