অবশেষে জট কাটল। শ্রমিক অসন্তোষের জেরে এক মাসেরও বেশি বন্ধ থাকা ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস চটকল খুলছে কাল, রবিবার। তবে, উত্পাদন শুরু হবে আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে। শুক্রবার, ভদ্রেশ্বর পুরসভার হলে এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে চটকল কর্তৃপক্ষ ৫৪ জন শ্রমিককে বসিয়ে দিয়েছিলেন গত ২৫ অক্টোবর। সেই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গত ২৬ অক্টোবর সব শ্রমিক কাজ বন্ধ করে দেন। সে দিনই কর্তৃপক্ষ চটকলে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দেন। ফলে, স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে চটকলের প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক বিপাকে পড়েন। ইতিমধ্যে চটকল খোলার জন্য প্রশাসনিক আধিকারিকেরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বার কয়েক বৈঠকও করেন। কিন্তু রফাসূত্র মেলেনি।
শুক্রবারই প্রথম ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। প্রশাসনের তরফে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপন দাশগুপ্ত এবং চন্দননগরের উপ-শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত। ছিলেন চটকল কর্তৃপক্ষ এবং শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ৫৪ জন শ্রমিকের মধ্যে বর্তমানে ৫২ জন শ্রমিককে কাজে নেওয়া হবে। পরে বাকি দু’জনকে নেওয়া হবে। এত দিন বন্ধ থাকায় শ্রমিকদের সুবিধার জন্য প্রত্যেককে দু’হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। পরে তাঁদের বেতন থেকে ২৫০ টাকা করে কেটে নেওয়া হবে। রবিবার চটকল খোলার পরে চার দিন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলবে।
শ্রম দফতরের পরিষদীয় সচিব তপনবাবু বলেন, “চটকল খোলার জন্য আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। শ্রমিকদের কিছু দাবি-দাওয়া মেনে নিয়ে কর্তৃপক্ষ মিল খুলছেন। বাকি সমস্যাগুলিও মিটে যাবে।” উপ-শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্করবাবু বলেন, “এ বারের বৈঠক সফল হয়েছে। শ্রমিকেরা কাজ করুন এবং মিলের উত্পাদন ক্ষমতা যাতে বাড়ে সে দিকে নজর দিক কর্তৃপক্ষ।” চটকলের পার্সোনেল ম্যানেজার কে পি শী বলেন, “মিল খুলছে। শ্রমিকরা ভাল করে কাজ করুন যাতে উত্পাদন বাড়ে।”
চটকল খোলার খবরে শ্রমিক মহল্লায় খুশির হাওয়া। শ্রমিক তাপস দাস বলেন, “মিল খুলবে জেনে খুব ভাল লাগছে। এত দিন বন্ধ থাকায় আর্থিক সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। আমরা চাই না শ্রমিক-মালিক দ্বন্দ্বে মিলের উত্পাদন ব্যাহত হোক।”