নতুন পাকা সেতু (বাঁদিকে)। ডানদিকে পুরনো কাঠের সাঁকো। ছবি: তাপস ঘোষ।
দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নড়বড়ে সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছিলেন। দাবি তুলেছিলেন সেতুর। অবশেষে তাঁদের সেই দাবি পূরণ হল। কানা নদীর দু’পাড়ে হরিপাল এবং তারকেশ্বরকে জুড়ল কংক্রিটের সেতু।
সোমবার হরিপালের সুলতানপুর এবং তারকেশ্বরের সোমশেরপুর মৌজার সংযোগকারী সেতুটির উদ্বোধন করলেন সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তা দেখতে দু’পাড়ের বহু মানুষ ভিড় করেন। সেতুটি হওয়ায় ওই দুই মৌজা-সহ দু’পাড়ের ১০টি মৌজার অন্তত ২৫ হাজার মানুষ উপকৃত হবেন।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালে সেতুটির শিলান্যাস হয়। প্রায় ৩২ মিটার লম্বা এবং ৬.৩০ মিটার চওড়া সেতুটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। এ দিন সেতুটি উদ্বোধনের পরে সেচমন্ত্রী বলেন, ‘‘বর্তমান সরকার ৪৫ মাসে ১০৫টি সেতু তৈরির পরিকল্পনা করেছিল। ইতিমধ্যে ৯২টি সেতু তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এত দিন এখানকার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতেন। যার ফলে মাঝেমধ্যে বিপদও ঘটত। এ বার তাঁরা স্বচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারবেন।” ফি-বর্ষায় কানা নদী উপচে প্লাবিত হয় দুই এলাকার বহু গ্রাম। এ দিন সেই নদী সংস্কারের আশ্বাসও দেন মন্ত্রী।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন হরিপালের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী বেচারাম মান্না, ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র, জেলা সভাধিপতি মেহেবুব রহমান প্রমুখ। বেচাবাবু বলেন, “হরিপালের অধিকাংশ রাস্তাই প্রায় পাকা হয়ে গিয়েছে। তবে, কানা নদী এখনও সংস্কার হয়নি। তা হলে এখানকার মানুষ বন্যার হাত থেকে রক্ষা পাবেন।’’
দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে এখানকার মানুষকে যাতায়াত করতে হচ্ছিল বাঁশের দু’ফুটের সাঁকো দিয়ে। গ্রামবাসীদের কারও শরীর খারাপ হলে চিকিৎসার জন্য তাঁকে গাড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হলে এত দিন কয়েক কিলোমিটার ঘুরপথে যেতে হত। এ বার গাড়ি সরাসরি সেতুতে উঠে যাবে।
নতুন সেতু হওয়ায় খুশি গ্রামবাসীরা। তাঁদের মধ্যে সোমশেরপুরের বাসিন্দা অপর্ণা সরকার বলেন, “সাঁকো দিয়ে আমরা সাইকেলেও যেতে পারতাম না। এতটাই নড়বড়ে। এ ভাবেই কষ্ট করে যাতায়াত করতে হয়েছে এত দিন। এ বার সেই কষ্ট লাঘব হল। আর ঘুরপথে যাতায়াত করতে হবে না।”
সুলতানপুরের অমল মাঝি বলেন, “আগে জমিতে ট্রাক্টর নিয়ে যেতে হলে অনেকটা ঘুরতে হতো। সময় নষ্ট হতো। এ বার ট্রাক্টর নিয়ে যে সেতুতে উঠতে পারব, সেটা ভেবেই আনন্দ হচ্ছে।”